ফিরছে পাহাড়ি পর্যটন

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। দিনে দিনে পর্যটকমুখর হয়ে উঠছে পাহাড়ি এলাকা। তাই সংশ্লিষ্টরা আনন্দিত। ফলে এই খাতের ব্যবসায় পুনরায় প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। তাদের আশা, সামনের পর্যটন মৌসুমে করোনাকালের ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা যাবে।

রাঙামাটিতে প্রতিদিনই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন পর্যটকরা। অন্যান্য দিনের তুলনায় ছুটির দিনে তাদের সংখ্যা বেশি থাকে। ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝরনা, সাজেক ভ্যালি ও হ্রদ ভ্রমণ বেশ জনপ্রিয়। দীর্ঘদিন পর ভ্রমণে বেরিয়ে ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন পর্যটকরা। গৃহবন্দি জীবনযাপনের পর নির্মল হাওয়ার স্বাদ নিতে পরিবারের সঙ্গে ঢাকা থেকে বেড়াতে এসেছেন মাফিয়া আক্তার। তিন বলেন, ‘এখানকার প্রকৃতি দেখে মন ভালো হয়ে যায়। সবুজের সমারোহ, স্বচ্ছ হ্রদের জল, ঝুলন্ত সেতুসহ সবকিছুই অসাধারণ।

রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদ আহাম্মদ আশ্বাস দিয়েছেন, ‘পর্যটন স্পটগুলোতে নির্বিঘ্নে বেড়ানো নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। একইসঙ্গে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

আরও পড়ুন :-  রাঙ্গামাটিতে পর্যটকের ভিড়

রাঙামাটি হোটেল মতিমহলের মালিক মো. শফিউল আজম জানান, করোনা মহামারির কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষণার সময় সব কর্মীকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। এখন আবারও সবাই কাজ শুরু করেছে। আমরা পর্যটকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’

ফাইল ছবি।

অক্টোবর থেকে পর্যটন মৌসুম, এখন সেভাবে বুকিং পাচ্ছেন এই ব্যবসায়ী। তার আশা, দীর্ঘদিন হোটেল বন্ধ থাকায় যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে উঠতে পারবেন।
করোনা মহামারির কারণে গত ১৮ মার্চ রাঙামাটির সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে রাঙামাটি জেলায় প্রায় ৫ লাখ পর্যটকের সমাগম হয়।

পর্যটক উপস্থিতি দেখে আশায় বুক বেঁধেছেন হোটেল ব্যবসায়ী ও বোট চালকরা। পর্যটন বোটঘাটের ইজারাদার রমজান আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘অনেকদিন পর্যটকদের ভ্রমণে বিধিনিষেধ থাকায় পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্তরা কর্মহীন ছিল। অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করেছে। এখন পর্যটক সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও কর্মচঞ্চল হয়েছে বোট চালক ও বোট মালিকরা।’

এদিকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করছে না কেউ কেউ। ছবি তোলাসহ মাস্ক না পরার বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছেন অনেকে।

তবে মাস্ক ছাড়া কাউকে পর্যটন কমপ্লেক্সে অবস্থিত ঝুলন্ত সেতুতে যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া। তিনি  বলেন, ‘পারিবারিকভাবে ছোট ছোট দলভিত্তিক ভ্রমণপ্রেমীরা আসছেন। আগের মতো বাসে চড়ে অনেক মানুষের একত্রে আসা এখনও শুরু হয়নি। আশা করছি, পর্যটন মৌসুমে সবকিছু স্বাভাবিক হবে।’

আরও পড়ুন :- এবার দেশের সর্বশেষ জেলাটিতেও করোনার বিস্তার