বিশ্বভ্রমণ করুন স্পন্সরের টাকায়

ফাইল ছবি

বিশ্বভ্রমণ করুন স্পন্সরের টাকায় এমন কথায় নিশ্চয়ই অবাক হয়েছেন? ঘুরতে কার না ভালো লাগে?আর যদি স্পন্সরের টাকায় ঘুরে দেখতে পারেন বিশ্ব তাইলো তো কথাই নেই।আজকে আমরা তারই কিছু নিয়ে আলোচনা করবো।

তার আগে আপনার কিছু কথা জানাতে হবে, যা আপনার আশাভঙ্গও হতে পারে। ধরুন, কেউ একজন আপনাকে এসে বললো- ‘আমি ঘুরতে যাবো, দশ হাজার টাকা স্পন্সর করুন’। আপনি হুট করেই টাকা দিয়ে দেবেন না, এটাই স্বাভাবিক।

স্পন্সরের দৃষ্টিকোণ থেকে নিশ্চয়ই লাভ খুঁজবেন।তার লাভ নিশ্চিত না হলে টাকা দেবেন না, সেটাই স্বাভাবিক।সুতরাং তাকে আশ্বস্ত করুন এবং তার কাছে এমন আইডিয়া উপস্থাপন করুন, যেটিকে আপনি নিয়ে যেতে পারেন সমাজের বৃহত্তর পরিসরে।

শুরু করা যাক এবার স্পন্সর খোঁজা দিয়ে :

রমজানে টিভিতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান তুলনামূলকভাবে বেশি প্রচারিত হয়। ধরুন, আপনিও একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান তৈরি করবেন। এজন্য আপনার প্রথম কাজই হচ্ছে, স্পন্সর খোঁজা। স্বাভাবিকভাবে কোম্পানিগুল সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন যেকোনো কিছুতেই বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন।

ফ্রান্সিস ট্যাপনকে হয়তো চেনেন। তিনি বিশ্বভ্রমণ করুন করেছেন।বিশ্বের জনপ্রিয় ট্র্যাভেল-ব্লগারদের মধ্যে অন্যতম। বিশ্বভ্রমণের স্পন্সরশিপের জন্য তিনি গোলিট নামের একটা কোম্পানি বরাবর আবেদন করেছিলেন। আবেদন গ্রহনের পর জানতে পারলেন ‘রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট’ বিভাগের প্রথম আবেদনকারী ব্যক্তি তিনিই। অর্থাৎ আমরা হয়তো অনেকে জানিই না যে, অনেক কোম্পানিরই এমন একটি বিভাগ থাকে, যেখানে তারা বিনিয়োগের জন্য উদ্যোক্তা খোঁজে। এক্ষেত্রে তারা কেবল বিনিয়োগের টাকাটুকুই উসুল চায় কোম্পানির প্রচারের বিনিময়ে।

আরো পড়তে পারেন : কি আছে ইরানের দর্শনীয় নিদর্শন ?

উপরের দুটি উদাহরণের কারণে পুরো বিষয়টি হয়তো আপনার কাছে একেবারে পরিস্কার হয়ে গেছে। ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসতে পারে বাইসাইকেল কোম্পানি, বেভারেজ, এয়ারলাইন্স কোম্পানি কিংবা ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান।টাকা আর প্রবল ইচ্ছে থাকলে বিশ্বভ্রমণ সম্ভব

টাকা আর প্রবল ইচ্ছে থাকলে বিশ্বভ্রমণ সম্ভব

এবার প্রস্তুতি নিন:

আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রতিষ্ঠানে কথা বলুন। তার আগে আপনি আপনার প্রস্তবনায় তিনটি বিষয় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে পারেন—

  • অন্যকে না দিয়ে কেন আপনাকে স্পন্সর করা উচিত?
  • আপনার মাধ্যমে কত মানুষ পণ্যটি সম্পর্কে জানতে পারবেন?
  • কীভাবে আপনি পণ্যের ব্র্যান্ডিং করবেন?

কোনো কোম্পানীর সাথে বৈঠকের আগে ব্যক্তিগত যোগাযোগকে কাজে লাগাতে পারেন। এমন মানুষদের বলুন আপনার আইডিয়াটির কথা যাতে কাজ হতে পারে । সেই সাথে প্রত্যেককে আলাদা আলাদাভাবে জিজ্ঞেস করতে পারেন কীভাবে কেমন করে এগোনো যায়! এটা একটা কৌশল। এদের কেউ একজনও হয়তো ভালো কোনো ফল দিতে পারে।

কোনো তারকাকে সঙ্গে নিতে পারেন:

এটি সম্ভব নাও হতে পারে! কারণ একজন মানুষের পক্ষে সেলিব্রিটি ‘ম্যানেজ’ করা কঠিন। তবে পদ্ধতিটি বেশ কাজে দিবে। আপনি হয়তো একজন সেলিব্রিটিকে নিয়ে বিশ্ব ঘুরতে পারবেন না, কিন্তু কয়েকজন সেলিব্রিটিকে কিছু কিছু জায়গায় যুক্ত করার কথা উল্লেখ করতে পারেন।

ভিন্নধর্মী আইডিয়া:

ক্রোয়েশীয় পর্যটক তমিস্লাভ পার্কোর গল্প দিয়ে লেখাটি শেষ করছি। নিজের টাকায় তিনি তুরস্ক, স্পেনসহ নানা জায়গায় ঘুরতেন আর ফেসবুকে আপলোড করতেন।

ফেসবুকে পেইজের সুবাদে তিনি একটা বিশাল কমিউনিটিও গড়ে তুলতে পেরেছিলেন।এ নিয়ে ক্রোয়েশীয় একটি দৈনিকে ফিচার হলে ভাগ্য খুলে গেলো তমিস্লাভের। ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি ‘মাস্টার কার্ড’ তাদের একটি ক্যাম্পেইনে করতে বাংলাদেশে একমাস থাকার অফার দিলো তমিস্লাভকে।সেই শুরু, এখন দেদারসে মাস্টারকার্ডের টাকাতেই দুনিয়া ঘুরছেন তমিস্লাভ।

সবাই ঘুরতে চায়,তবে টাকার অভাব সবারই। তাই স্পন্সর পাবার বাজারেও তুমুল প্রতিযোগিতা এখন।প্যাশনের উগ্রতার সঙ্গে মাথার তীক্ষ্ণতাটুকু কাজে লাগাতে পারলেই আপনি সফল! আরো সহজভাবে বললে, লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে দরকার অপ্রথাগত কোনো আইডিয়া।

আরো পড়ুন : বিশ্বভ্রমণ করুন, আবার পয়সাও কামিয়ে নিন