মিথ্যা অভিযোগে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসাবে নিয়োগ পেতে যাওয়া রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. আব্দুর রহিমের নিয়োগ ঝুলে রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কবিতা ও প্রবন্ধ লিখে বই প্রকাশ করার অভিযোগ করা হয় তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, রাকাবের ডিএমডি মো. আব্দুর রহিমকে রূপালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি প্রস্তুত করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তবে তার বিরুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে বই প্রকাশ করার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়। ফলে শেষ মুহূর্তে উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর ওই চিঠি আর পাঠানো হয়নি।
এবিষয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ডিএমডি মো. আব্দুর রহিম দেশসমাচার কে জানান তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা তথ্য ছাড়ানো হচ্ছে। এসময় তিনি বলেন, আমার লেখা বৃক্ষের শিক্ষা, নিঃশেষে সৃষ্টি’সহ বেশকিছু কবিতা প্রকাশিত রয়েছে। তবে সেগুলো কোনো ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে নয়। তবে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে কবিতা ও প্রবন্ধ লিখে বই প্রকাশ করার যে তথ্য ছাড়ানো হয়েছে সেগুলো সঠিক নয় বলে জানান তিনি। আমার লেখা কবিতা ও বইয়ে এডিট করে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি বসানো হয়েছে উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে, সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ৫ ব্যাংক- সোনালী, জনতা, অগ্রণী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে (বিডিবিএল) এমডি ও সিইও নিয়োগ দিতে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। একই সঙ্গে রাকাবের ডিএমডি মো. আব্দুর রহিমকে রূপালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি প্রস্তুত করে। তবে শেষ মুহূর্তে উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর ওই চিঠি আর পাঠানো হয়নি।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে মো. আব্দুর রহিম অনেক কবিতা ও প্রবন্ধ লিখে প্রকাশ করার অভিযোগ উঠে। সে কারণেই শেষ মুহূর্তে উচ্চ পর্যায়ের মৌখিক নির্দেশনায় তাঁকে রূপালী ব্যাংকের এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা চিঠি পাঠানো হয়নি। নতুন কাউকে ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা সরকারের সময় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের এমডিদের চুক্তির বাকি মেয়াদ বাতিল করতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। তারপর ব্যাংকগুলোর এমডি ও সিইও পদ শূন্য হয়।
এরপর রাষ্ট্র মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও চারটি বিশেষায়িত ব্যাংক মিলিয়ে ১০টি ব্যাংকে নতুন এমডি ও সিইও নিয়োগের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে সুপারিশ পাঠায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এই সুপারিশ গত ১৬ অক্টোবর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং ২০ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অনুমোদন করেন। চূড়ান্ত তালিকায় মো. আব্দুর রহিমের নামও ছিল।