আইভীর বিজয়ের নেপথ্যে ৬ নেতা

দলের বহু লড়াই, সংগ্রামে সারথী তারা। ক্রাইসিস ম্যানেজার হিসেবেও পরিচিত নেতাকর্মীদের কাছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার বিজয়ে আবারও নিজেদের প্রমাণ করলেন। বরাবারের মতো তাদের সাংগঠনিক দক্ষতা, যোগ্যতা আর শতভাগ আন্তরিকতা এখানেই প্রমাণিত।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার বিজয়ের মধ্যে দিয়ে স্বস্তি ফিরেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে। নিজ দলের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব নিরসনের মধ্যে দিয়ে এ বিজয় উপহার দিয়েছেন আওয়ামী লীগের ৬ নেতা-সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাবু সুজিত রায় নন্দী।

নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে তাদের নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ভোটের মাঠে সুফল পেয়েছেন দলটির মনোনীত মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, নৌকা উন্নয়নের প্রতীক, শান্তির প্রতীক, গণতন্ত্রের প্রতীক। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার বিজয়ের মধ্যে দিয়ে অশুভ রাজনৈতিক শক্তির পরাজয় হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের শুরু থেকে ব্যাপক আলোচনায় ছিল স্থানীয় সাংসদ শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াৎ আইভীর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। অভিযোগ ছিল, সাংসদ শামীম ওসমানের কর্মী সমর্থকরা প্রকাশ্যে নৌকার নির্বাচনি প্রচারণায় করছেন না। তারা স্বতস্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এমন অবস্থায় ওই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী অভিযোগ করেন, তৈমূর আলম খন্দকার ‘গডফাদার’ শামীম ওসমানের প্রার্থী।

এমন অভিযোগের পর নীরবতা ভেঙে নৌকার পক্ষে মাঠে নামার ঘোষণা দেন শামীম ওসমান। তিনি বলেন, আজকে থেকে আমিও মাঠে নামলাম, আপনারাও মাঠে নেমে পড়েন। কে প্রার্থী হু কেয়ারস, কলাগাছ না আমগাছ সেটা আমি দেখব না। দেখার বিষয় নৌকা স্বাধীনতার, শেখ হাসিনার। বঙ্গবন্ধুর ও আওয়ামী লীগের। আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি তাদের এই নৌকার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সর্বশেষ গতকাল দলীয় প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আইভীকে ভোট দেন তিনি। এ সময় বলেন, নৌকা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। তবে নির্বাচনের আগের সব শঙ্কা কাটিয়ে গতকাল বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার মনোনীত প্রাথী সেলিনা হায়াৎ আইভী। রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার তাকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

এদিকে আইভীর বিজয়ে স্বস্তি ফিরেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের মাঝে। তারা বলছেন, নৌকা উন্নয়নের প্রতীক, শান্তির প্রতীক, গণতন্ত্রের প্রতীক। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার বিজয়ের মধ্যে দিয়ে অশুভ রাজনৈতিক শক্তির পরাজয় হয়েছে। এ দেশের মানুষ অশুভ রাজনৈতিক শক্তি পছন্দ করে না। সেই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকায় ভোট প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে শুভ রাজনৈতিক শক্তির বিজয় নিশ্চিত করেছে। আইভীর বিজয়ের মধ্যে দিয়ে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। তার হাত ধরে নারায়ণগঞ্জবাসী উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাবে।

তারা আরও মনে করেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তারা আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন, নৌকায় ভোট চেয়েছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। দলের অভ্যন্তরে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব, কোন্দল, বিভক্তি-বিভাজনের রাজনীতি নিরসন করেছেন। ফলে ভোটের মাঠে নৌকা বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছে।

এই বিজয়ের মধ্যে দিয়ে নারায়ণগঞ্জ আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

লেখক: মো: মহসিন হোসেন