পেঁয়াজের ঘাটতি মেটাতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ‘বিপ্লব’ হতে পারে সমাধান

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ

দেশে সারা বছর পেঁয়াজ চাষাবাদ না হওয়ায় চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। শুধুমাত্র শীতকালে পেঁয়াজ চাষ করে বিপুল জনসংখ্যার জন্য পেঁয়াজের চাহিদা মেটানো সম্ভব না। আর এ জন্য গ্রীষ্মকালে পেঁয়াজ উৎপাদন করতে বহুজাতিক কোম্পানি ইষ্টওয়েষ্ট সীড ইন্টারন্যাশেনাল এর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের জাত ‘বিপ্লব’ পেঁয়াজ আবাদে ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।

কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলায় কৃষক ফরজ উদ্দিনের মাঠে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বীজ প্রতিষ্ঠান এসিআই সীড এর প্রদর্শনী প্লটে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের জাত বিপ্লব এর বাম্পার ফলন হয়েছে।

দেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এসিআই গেলো দুই তিন বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযোজন পরীক্ষার মাধ্যমে ‘বিপ্লব’ নামে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় গ্রীষ্মকালীন একটি পেঁয়াজের জাত নির্বাচন করে। এই জাতটির হেক্টর প্রতি ফলন ৩০ থেকে ৩২ মেট্রিকটন, অথচ দেশে পেঁয়াজের গড় ফলন হয় ১০.৮২ মেটন/হেক্টর।

দেশে বর্তমানে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৩৫ লক্ষ মেটিকটন। সেখানে আমাদের দেশে ২.৩৭ লক্ষ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের মোট উৎপাদন হচ্ছে ২৫-২৬ লক্ষ মেট্রিকটন। ফলে প্রতি বছর প্রায় ১০ লক্ষ টন পেঁয়াজ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদনে স্ব-নির্ভর হওয়ার ক্ষেত্রে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ বিপ্লব গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারে।

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ‘বিপ্লব’ উচ্চ তাপমাত্রা ও অধিক বৃষ্টিসহনশীল জাত, যা এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চাষ করা যায়। জাতটি চারা লাগানোর ১০০-১১০ দিনের মধ্যে উত্তোলন করা যায়। এটি রোগবালাই সহনশীল, উচ্চ ফলনশীল একটি জাত যা চাষ করলে একদিকে কৃষক যেমন লাভবান হবে, তেমনি দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি মেটানোও সম্ভব হবে। এখানে উল্লেখ্য যে গ্রীষ্মকালীন জাত পেঁয়াজ বিপ্লব বসতবাড়ির আঙ্গিনায় চাষ করার জন্য ও একটি উপযুক্ত জাত যা অভিযোজন পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলায় এসিআই সীড এর প্রদর্শনী প্লটে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের জাত বিপ্লব এর বাম্পার ফলন হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

এসিআই সীড এর প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শন প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক। এসিআই সীডের বিজনেস ডিরেক্টর সুধির চন্দ্র নাথ এর সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর মসলা গবেষণা কেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জাহান আল মাহমুদ, উপজেলা কৃষি অফিসার রমেশ চন্দ্র ঘোষ, এবং এসিআই সীডের বিজনেস ম্যানেজার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

অনুষ্ঠানে এসিআই সীডের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাসহ আরও উপস্থিত ছিলেন জিল্লুর রহমান, টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর, দিশা এনজিও।