রাজধানীতে ৭৫টি ভয়ঙ্কর কিশোর গ্যাং

কিশোর গ্যাং

রাজধানীতে  অপরাধের প্রধান একটি ভয়ঙ্কর রূপ কিশোর গ্যাং। রাজধানীতে এখন ৭০ থেকে ৭৫টি কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরা এলাকাতেই এরকম বহু গ্যাংয়ের বাড়-বাড়ন্ত। মারামারি, ছিনতাই, মাদকের কারবার এমনকি হত্যাকাণ্ডের মতো অপরাধে জড়াচ্ছে কিশোররা।

আর এসব কিশোর গ্যাং গ্রুদের মদদ দিচ্ছে কথিত বড় ভাইরা, ক্ষেত্রবিশেষ রাজনৈতিক নেতৃত্ব। সম্প্রতি নগরীর উত্তরা আজমপুর রেললাইনের পাশে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় রক্তাক্ত হয় এক কিশোর। সিসিটিভির আরেকটি চিত্রে দেখা যায় একই এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের মহড়া।

কয়েক বছর আগে উত্তরায় আদনান নামে এক ছাত্র কিশোর গ্যাংয়ের বলি হয় । উত্তর খানে তুচ্ছ ঘটনায় এক কিশোরকে খুন করে গ্যাং সদস্যরা। এর পরপরই ঘটে আরও কয়েকটি হত্যাকাণ্ড। এছাড়াও তাদের হামলার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষও।

র‌্যাব-পুলিশের অভিযানে এ পর্যন্ত কিশোর গ্যাংয়ের কয়েকশ’ সদস্য গ্রেফতার হলেও এখনও সক্রিয় আছে অনেক। সাধারণ মানুষ বলছে, ‘অনেক সময় রাতে চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। রাস্তায় মারধর করে। অনেক সময় ছিনতাইয়ে বাধা দেয়ায় ছুরিকাঘাত করে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পুলিশকে এ ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।’

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাইনস্টার গ্রুপ, যার নেতা সিয়াম। টিএমসি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে মামুন আর শিশির। পাকুরিয়ার সোলেমান-মোবারক গ্রুপও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিশোর গ্যাংয়ের এক সদস্য জানায়, ‘এমনও আছে, মানুষ বিভিন্ন জায়গায় মামলাও দিয়েছে। কখনো আবার গ্রেফতারও হয়েছি। বড় কোন ঘটনা ঘটালে এলাকা ছেড়ে যায় অনেকে। পরে পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে পুনরায় ফিরে আসে।’

কথিত বড় ভাইদের মদদেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গ্যাংয়ের কিশোররা। জানতে চাইলে ওই কিশোর বলেন, ‘অনেক সময় কোন সদস্য ধরা পড়লে বাকিরা বড়ভাইদের জানায়। তিনি আবার সব জায়গায় কথা বলে ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করেন।’

পুলিশ রাজধানীতে ৭০ থেকে ৭৫টি গ্রুপের দেড় থেকে ২ হাজার জনের একটি তালিকা করেছে। জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ছোট ছোট অপরাধের জন্য অনেক সময় বকাঝকা করা, অভিভাবককে ডেকে এনে মুচলেকার মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু বড় কোন অপরাধ করলে তো আমাদের করার কিছু থাকে না। তাই আমরা মামলা নিই।’

আরো পড়ুন- ৯ মাসে নিহত ৩৯ সাংবাদিক: ইউনেস্কো

রাজধানীতে কোনো গ্যাং কালচার থাকবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি জানান, ‘যত বড় সন্ত্রাসী , যত ক্ষমতাধর অথবা যত চতুর হোন না কেন, আপনি অপরাধ করে এ ঢাকা শহরে বাঁচতে পারবেন না।’

আমাদের সন্তানদের কেউ মাগরিবের পর বাহিরে থাকবে না। তাদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান ডিএমপি কমিশনার।