করোনার চিকিৎসায় সেরা অস্ত্র হতে পারে প্লাজমা থেরাপি

প্লাজমা থেরাপি

করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে নতুন এক আশার আলো প্লাজমা থেরাপি।কেউ কোভিড-১৯ থেকে সেরে উঠলে তার রক্ত থেকে প্লাজমা নিয়ে আক্রান্ত রোগীর শরীরে প্রবেশ করিয়ে এই চিকিৎসা করা হয়৷

মানুষের রক্তের জলীয় অংশকে বলা হয় প্লাজমা বা রক্তরস। রক্তের ভেতরা প্রায় ৫৫ ভাগই থাকে হলুদাভ রঙের এই প্লাজমা। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে যারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদের শরীরে এক ধরণের অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার তৈরি হয়।

আক্রান্ত হওয়ার সুস্থ্য ব্যক্তির শরীর থেকে প্লাজমার মাধ্যমে সংগ্রহ করা এই অ্যান্টিবডি যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করা হয়, তখন তার শরীরের সেই অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। তখন তিনিও সুস্থ হয়ে ওঠেন।

চিকিৎসকরা এভাবেই করোনাজয়ী একজনের শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করবেন। ফলে তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও তৈরি হবে।

বিশ্বের অনেক দেশে এরইমধ্যে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশে আপাতত এই চিকিৎসার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যরা জানিয়ছেেন সফলতা পাওয়া গেলে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসায় এটি পুরোদমে শুরু করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, একজন সুস্থ মানুষের রক্তে ৫৫ শতাংশ প্লাজমা থাকে। আর ৪৫ শতাংশ থাকে রক্তের কোষ। রক্ত থেকে প্লাজমা আলাদা করলে দেখা যাবে, এর মধ্যে ৯২ ভাগ পানি ও ৭ দশমিক ৫ ভাগ থাকে প্রোটিন।

করোনা আক্রান্ত রোগী পরপর দু’বার করোনা নেগেটিভ প্রমাণিত হওয়ার পর কমপক্ষে ১৪ দিন অতিক্রান্ত না হলে তার শরীর থেকে প্লাজমা নেয়া যাবে না।

মানুষের রক্তের ৫৫ ভাগই প্লাজমা৷ এটি দেয়ার ক্ষেত্রে কোনা শারীরিক ঝুঁকি নেই বলেও জানিয়েছেন চিকিৎকরা৷ তাই করোনা থেকে আরোগ্যলাভকারীরা যদি প্লাজমা দিতে এগিয়ে আসেন তাহলে অনেক জীবন বাঁচানো যাবে।

বাংলাদেশে প্লাজমা সংগ্রহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে তিনি মনে করেন চিকিৎসকরা। কারণ এখনো সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের খুব একটা সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য আপাতত যাদের প্রয়োজন হচ্ছে তারা বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে প্লাজমা সংগ্রহ করছেন।

প্লাজমা থেরাপি সফল করতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ এবং সরকারি সহযোগিতা ছাড়া প্লাজমা সংগ্রহের পুরো কাজটি সফল করা সম্ভব নয়।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে সুস্থ হয়েছেন, এমন যে কেউ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগে যোগাযোগ করে প্লাজমা দিতে পারবেন।

আরো পড়ুন- অনলাইনে স্বাস্থ্যসেবার আয়োজন