যা জানতেই হবে

যা জানতেই হবে

যা জানতেই হবে- শেখ মো. রিয়াজ উদ্দিন ও খায়রুল হাসানের যৌথ গ্রন্থনায়, মুহাম্মদ তৈয়্যব হোসাইনের সম্পাদনায় এবং বিশ্ব কল্যাণ পাবলিকেশন্স প্রকাশনা সংস্থার উপস্থাপনায় যথার্থ মানসম্পন্ন একটি মৌলিক ইসলামী গ্রন্থ।

গবেষণা ও সংকলনধর্মী ২৪০ পৃষ্ঠার এই বইটি ইসলাম ও ইসলামী জীবন দর্শনের একটি প্রাথমিক ও পরিচিতিমূলক গ্রন্থ উদ্যোগ- যা বিশেষ কোনো জ্ঞান শাখায় বিস্তৃত না হয়ে ইসলামী জীবন বিধানের মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর সংক্ষিপ্ত আলোকপাত ঘটিয়েছে।

ইসলাম কী, মৌলিক জানার বিষয়গুলো কী কী, জীবনযাপনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশ-বিধান কী- অত্যন্ত সহজ ভাষায় সেই সব প্রশ্নের অবতারণা এবং উত্তর-ব্যাখা নিয়েই মূলত এই উদ্যোগ।

ব্যতিক্রম এ উদ্যোগের আগাগোড়া: লেখক-জুটি বয়সে তরুণ, উদ্যোগী এবং উদ্যমী। এই বয়সের লিখিয়েরা সাধারণত দুনিয়াবি বিষয় নিয়েই লেখে। তারা লিখেছেন জীবনের সত্য দর্শন নিয়ে, আলস্নাহ, রাসূল (সা.), পাক কোরআন, ইসলামী জীবনাদর্শ ও মূল বিশ্বাসের পরিচয় পরিচিতি নিয়ে।

বয়সের সাধারণ বৈশিষ্ট তারা জয় করেছেন মানসিক পর্যায়ের উত্তরণ ঘটিয়ে। তারা যে সহজেই স্পর্শ করতে পারবেন নবীন পাঠকের হৃদয় এটা কতকটা নিশ্চিত করে বলা যায়। তাদের দর্শনের মূল ভিত্তি স্রষ্টা, প্রতিপালক মহান আলস্নাহর একত্ব ও সার্বভৌম কর্তৃত্ব এবং তার প্রেরিত রাসূল হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর রেসালাত।

মৌলিক বিষয় অবতারণায় তারা যথার্থই একটি সরল সূচি বা তফসিল মোতাবেক এগিয়েছেন, যেমন: ইমান, তাওহিদ, শাহাদত, ফেরেশতা, জিবরাঈল (আ.), কোরআন, তাফসির, ভাগ্য, নিফাক, ইবলিস, শিরক, কুফর, গোনাহ, আহলে কিতাব, তওবা, ইসলাম, শরিয়াহ্‌, আহকাম, ইবাদত, তাকওয়া, ইহসান, আখলাক, চারিত্রিক গুণাবলি, সালাম, পর্দা, আদম (আ.) থেকে শুরু করে কোরআনে উলিস্নখিত ২৫ জন নবী ও রাসূলের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, আশারায়ে মুবাশশারা, খোলাফায়ে রাশেদীন, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাত, সুন্নাত, বিদআত, সালাত, সাওম, হজ, যাকাত, সাদাকা, সুদ, কিয়ামতের আলামত, দাজ্জাল, কিয়ামত, পুলসিরত, জাহান্নাম, জান্নাত, তাসবিহ, জিকির ও দোয়া, পিতামাতার প্রতি কর্তব্য ও সুন্দর জীবনের পাথেয়।

মোটকথা পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হিসেবে ইসলামের মৌলিক ভিত্তিগুলোর ওপর সংক্ষিপ্তাকারে হলেও সারগর্ভ আলোচনা গ্রন্থটিকে আলোকিত করেছে। বিশ্বাসী মন মাত্রেরই বিষয়গুলো এমন- ‘যা জানতেই হবে।’ পৃথকভাবে হলে প্রতিটি বিষয়ই এরকম একটি গ্রন্থরূপ দাবি করতে পারে।

তবে যদি নির্ঘণ্ট বা ‘অ্যালমানাক’ ধরনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতির কথা বলি, তাহলে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি এরকমই হয়ে থাকে। গ্রন্থের বিষয়গুলোতে ইসলামের মূলকথা এবং ইসলামী ইতিহাস ও ধর্মালোচনার ছোট ছোট পরিচিতি প্রশ্নব্যাকুল চিত্ত প্রশমনে সহায়ক হবে বলে বিশ্বাস রাখি।

লেখক জুটি শেখ মো. রিয়াজ উদ্দিন এবং খায়রুল হাসান তাদের এই প্রকাশনা উদ্যোগে সত্য ও আলোর পথে পাঠকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বিশ্বাসী মাত্রেরই এ বিষয়গুলো জানার কথা। তারপরও সংকলনের ধারাবাহিকতায় সেই চির সত্য বিষয়গুলোই এখানে বিধৃত হয়েছে তাদের সুলেখিত ভাষা ও রচনাশৈলীর মাধ্যমে। উদ্ধৃতি ঋণ ছাড়াও তারা তাদের সাধারণ ধারণাগুলো অসাধারণভাবে এ বইয়ে তুলে ধরেছেন।

বইয়ের উৎসর্গলিপি একজন পাঠক হিসেবে সত্যিই আমার অন্তর স্পর্শ করেছে। তাদের পিতামাতা ও জ্ঞানের আলো বিতরণকারী মনীষীদের প্রতি উৎসর্গিত বইটির সূচনাস্তবকেই লেখকদ্বয় মহান স্রষ্টা প্রতিপালকের কাছে সবিনয় এই আরজ গুজার করেছেন যে, ‘হে সর্বশক্তিমান আলস্নাহ! হে আমাদের স্রষ্টা, মালিক ও রব, তুমি আমাদের এ আন্তরিক প্রসায়কে কবুল কর।

এ বইয়ের পাঠকদের তুমি হেদায়েতের আলোয়ে আলোকিত কর।’ লেখকদ্বয়ের দোয়ায় শামিল হয়ে এ নগণ্য পাঠকও মহান প্রতিপালকের উদ্দেশে আরজ করছি, আমিন, সুম্মা আমিন। তুমি তোমার কৃপার অফুরান ভান্ডার থেকে এই নবীন দুই বান্দাকে তোমার অসীম দয়া ও রহমতকে তাদের পাথেয় করে দাও।

এই বইটির বহুল প্রচার ও পাঠকপ্রিয়তার জন্যও আরজ করছি এবং মহান রবের কাছে এই আবেদন রাখছি যে, শেখ মো. রিয়াজ উদ্দিন ও খায়রুল হাসানের সুমুদ্রিত ও সুপ্রকাশিত গ্রন্থ ‘যা জানতেই হবে’ এর মহৎ উদ্যোগ সংকল্প ও অভীষ্ট লক্ষ্যকে পূর্ণতা দাও এবং তাদের অন্তরের শুভ আকাঙ্ক্ষাকে কবুল ও মঞ্জুর করে নাও।

লেখক: খন্দকার হাসানাত করিম (সাংবাদিক ও চিত্র নির্মাতা)
ধানমন্ডী, রোড ১৯, বাসা-৯৪, ঢাকা, ১২০৫