বহিরাগতসহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদে ঢাকা কলেজ ছাত্রদল নেতার পদত্যাগ

ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের

ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের শীর্ষ পদে বহিরাগতসহ অন্যান্য অনিয়মের প্রতিবাদে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মেসকাত হোসেন তনয় পদত্যাগ করেছেন।

১২ মে ২০২২ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বরাবরে পদত্যাগ পত্র পাঠান মেসকাত হোসেন তনয়।

ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ গত ১০ই মে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা মহানগরের ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দুটি মহানগর কমিটি ঘোষণা করে। দীর্ঘ ৬বছর পর ঘোষণা করা হয় ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের কমিটি। কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি সম্পাদকের বিরুদ্ধে অঞ্চলপ্রীতি, ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন, মামলা, হামলা, জেল জুলুমের স্বীকার এমনকি আন্দোলন করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ ছাত্রনেতাদেরকেও কমিটির বাইরে রাখার।

জানা গেছে, খোদ সুপারফাইভে নেতৃত্বে কলেজের ছাত্র নয় এমন একজনকে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক পদে পদায়ন করা হয়। জানা যায় ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের কমিটিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতির কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন এর নিজ জেলা যশোরের সন্তান এবং তার একান্ত অনুগত,অযোগ্য-অথর্ব শাহিনুর রহমান শাহিনকে সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল এর নিজ এলাকার ছেলে তার একান্ত অনুগত ওয়ানম্যান আর্মি খ্যাত মৃধা জুলহাসকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

কলেজের নেতাকর্মীদের সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ, কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক সাজ্জাদ হোসাইন চৌধুরী মূলত ঢাকা কলেজের ছাত্রই নয়। সে ঢাকা কলেজ বাংলা ডিপার্টমেন্ট এর ০৯/১০ এর ছাত্র দাবী করলেও তার সেশনে তাকে নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ছিলো এমনকি এর পক্ষে সে কোন ধরনের কাগজপত্রও উপস্থাপন করতে পারেনি।

এ বিষয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির পদত্যাগ সহ সভাপতি মেসকাত হোসেন তনয় বলেন, আমি ২০০৯ইং সালে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসি এবং কোচিংরত অবস্থায় রুপম হক তৎকালীন কর্মী পরবর্তীতে সহ সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা কলেজ ছাত্রদল (মামুন – মিঠু কমিটি) ভাইয়ের হাতধরে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হই এবং সকল কর্মসূচিতে ৮-১০জন কর্মী সমেত অংশগ্রহণ করি।

তনয় বলেন, পরবর্তীতে রুপম ভাই রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাওয়ায় আমি অনার্স ( ২০০৯-১০) শিক্ষাবর্ষে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়েই তৎকালীন ( মামুন-মিঠু সুপার সেভেন কমিটির) সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার রিয়াজ ভাইয়ের নেতৃত্বে নিয়মিত পার্টি অফিস ও সকল কর্মসূচিতে আমার ক্যাম্পাসের ডিপার্টমেন্টের বন্ধুদের অকৃত্রিম ভালোবাসায় ১০-১৫ জন ছাত্রদল কর্মী নিয়ে অংশগ্রহণ করি। কমিটি পূর্নাঙ্গ করার ৮/১০ দিন আগে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া রিয়াজ ভাইয়ের নিজ এলাকা বরিশালের আমার জনৈক বন্ধু ( নাম বলে কারো মনে কষ্ট দিতে চাইনা) যারা আমার ৬/৭ মাস পরে রাজনীতিতে আসে তাদেরকে পদায়ন করা হয় অথচ আমাকে পদবঞ্চিত রাখা হয়। যাইহোক এরপরও থেমে না থেকে নতুন কর্মী তৈরি ও সকল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখি।

পরবর্তীতে (মাসুদ-সজীব) কমিটির সুপার ফাইবের বাহিরের সবার থেকে বেশী কর্মী নিয়ে আমি সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা সত্ত্বেও আমার ১৬জন সক্রিয় কর্মীকে বিভিন্ন পদে পদায়ন করা হলেও আমাকে এবারও আমার ইয়ারের ১৪ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক করা হয়। কমিটিতে এত অবমূল্যায়িত হবার পরও দলের কোনো কর্মসূচিতে অনুপস্থিত থাকিনাই। ২৮/০৩/২০১৭ তারিখ ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাস সংলগ্ন নীলক্ষেত মোড়ে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হই। এই হামলায় আমার দুই কানের পর্দাই ছিড়ে যায়। এর ৬ মাস না পেরোতেই ১৯/০৯/২০১৭ তারিখ ঢাকা কলেজের প্রধান গেইটের সামনে আবারও সশস্ত্র ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হই।

এমতাবস্থায় ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের প্রায় ৯০ ভাগ সক্রিয় কর্মীর মাঝেই এই কমিটি নিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজমান। তাই আমি এই অযোগ্য ও অথর্ব কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলাম বলে উল্লেখ করেন তিনি।