ইকো ট্যুরিজমের বিশাল সম্ভাবনা

ইকো ট্যুরিজম

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ ইকো-ট্যুরিজমের সম্পদে ভরপুর । রয়েছে বিশাল সম্ভাবনা এ খাতে। শুধু প্রয়োজন যথাযথ পরিকল্পনার। বাংলাদেশের সর্বত্রই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রাকৃতিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক নিদর্শনসমূহ। এসব নিদর্শনসমূহকে ঘিরে ইকো ট্যুরিজম গড়ে তুলতে পারলে সমৃদ্ধ হবে অর্থনীতি।

ইকো ট্যুরিজম হলো একান্ত নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে ভ্রমণের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন বা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের উদ্দেশ্যে বন ও বন্যপ্রাণীর সৌন্দর্য অবলোকন।আমাদের দেশে দিনে দিনে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ইকো ট্যুরিজম। পর্যটনের নতুন এই ধারণায় পর্যটকগণ পরিবেশের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য স্থানীয় পরিবেশ ও মানব সম্প্রদায়ের সাথে দায়িত্বশীল আচরণ করেন। একই সাথে এখানে সুযোগ থাকে প্রকৃতির সঙ্গে গভীরভাবে মিশে গিয়ে নতুন কিছু জানার ও উপলব্ধি করার।

আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান এবং এশিয়ার কিছু শিল্প উন্নত দেশে ইকো-ট্যুরিজমের যথেষ্ট বিকাশ সাধন ঘটেছে। অন্যান্য দেশের মতো পর্যটন শিল্প আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। মালদ্বীপ, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া কিংবা থাইল্যান্ডের মতো বহুদেশের অর্থনীতি পর্যটন খাতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল।

ইকো-ট্যুরিজমের উপাদানের মধ্যে রয়েছে- পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, বৃক্ষ-বনানী, প্রাণীকূল, সংস্কৃতি-সভ্যতা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাগর-সৈকত, জীববৈচিত্র্য,  জনগণের আয়-রোজগার ও জীবনধারণ পদ্ধতি। যার সব কিছুই আছে বাংলাদেশের। পৃথিবীর একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ইকো-ট্যুরিজম গড়ে তোলা সম্ভব। এটি বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে পৃথিবীব্যাপী সুপরিচিত।

সেন্টমার্টিন বা অনুরূপ দ্বীপকেও ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা যায়। এর ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ইকো-ট্যুরিজমের অনুকূল। দ্বীপে উন্নতমানের কোরাল, বিরল প্রজাতির কচ্ছপ, উপকূলের শান্ত ও নীল জলরাশি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।

এছাড়া সিলেটের চা বাগান, বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম,  কুয়াকাটার মতো অনন্য প্রাকৃতিক স্থানসমূহ ইকো-ট্যুরিজম এর উৎকৃষ্ট কেন্দ্র হতে পারে। দেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাসস্থানকে ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।

শুধু পরিবেশ রক্ষা নয়, তা উন্নয়নের জন্যও ইকো-ট্যুরিজম প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের জনগণ ও সরকারের জীববৈচিত্র্যের প্রতি আছে অসীম মায়া এবং কঠিন প্রতিশ্রুতি। সময়োপযোগী পরিবেশ আইন ও জাতীয় অভিযোজন কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বিলুপ্তির হাত থেকে প্রাণীকূল রক্ষায় গণমানুষের সহযোগিতাই এর প্রমাণ।

আরো পড়ুন- অস্তিত্ব সংকটে ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো