কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ বা অ্যাগ্রিকালচারালি ইম্পর্ট্যান্ট পারসন (এআইপি) নির্বাচিত হয়েছেন দেশের অন্যতম বহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান এসিআই এগ্রিবিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী।
সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয় এক গেজেটের মাধ্যমে ২২ ব্যক্তিকে ২০২১ সালের জন্য ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ বা অ্যাগ্রিকালচারালি ইম্পর্ট্যান্ট পারসন (এআইপি) নির্বাচিত করেছে। নির্বাচিত এআইপিরা চলতি বছরের জুলাই থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সিআইপির মতো বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।
দেশে কৃষি খাতে সাফল্যের অন্যতম কারিগর কৃষক, কৃষিবিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা, উৎপাদনকারী, খামারিসহ কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্তদের প্রতিবছর সম্মান জানাতে ও উৎসাহিত করতে এআইপি সম্মাননা চালু করে সরকার। এ লক্ষ্যে ২০১৯ সালে এআইপি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। সে আলোকে ২০২০ সালের জন্য দেশে প্রথমবারের মতো ১৩ জন ব্যক্তিকে এআইপি সম্মাননা দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।
এআইপি সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিরা নির্ধারিত এক বছরের মেয়াদে সচিবালয়ে ঢোকার পাস, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ, বিমান ও রেলের টিকিটে অগ্রাধিকার এবং নিজে ও পরিবারের সদস্যদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় কেবিনে অগ্রাধিকার পাবেন।
এবার মোট পাঁচটি ক্যাটাগরি বা শ্রেণিতে এআইপি নির্বাচন করা হয়েছে। এগুলো হলো কৃষিশ্রেণি (উদ্ভাবন জাত বা প্রযুক্তি), কৃষি উৎপাদন বা বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পশ্রেণি, রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য উৎপাদন শ্রেণি, স্বীকৃত বা সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত কৃষি সংগঠন শ্রেণি এবং বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত শ্রেণি।
কৃষি (উদ্ভাবন জাত বা প্রযুক্তি) শ্রেণিতে নির্বাচিত ব্যক্তিরা হলেন এসিআই লিমিটেডের অ্যাগ্রিবিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট এ কে এম ফারায়েজুল হক আনসারী, কুমিল্লার কৃষি উদ্যোক্তা এম এ মতিন, জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. ওলি উল্লাহ ও বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাশ।
কৃষি উৎপাদন বা বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পশ্রেণিতে ১০ জন এআইপি হয়েছেন। তাঁরা হলেন টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মো. ছানোয়ার হোসেন, ফরিদপুরের খান বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী শাহীদা বেগম, খুলনার ডুমুরিয়ার কৃষি উদ্যোক্তা সুরেশ্বর মল্লিক, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের গ্রিন প্ল্যানেট অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী মো. রুহুল আমীন, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার অ্যাগ্রো বেজড সোশিও ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেসের চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন, পাবনার ঈশ্বরদীর তন্ময় ডেইরি খামারের স্বত্বাধিকারী মো. আমিরুল ইসলাম।
এই শ্রেণিতে আরও আছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আল বারাকা মৎস্য খামার অ্যান্ড হ্যাচারির স্বত্বাধিকারী মাছুদুল হক চৌধুরী, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মো. রফিকুল ইসলাম, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের সিরাজ বহুমুখী খামারের স্বত্বাধিকারী মো. সিরাজুল ইসলাম ও শেরপুর সদর উপজেলার মা-বাবার দোয়া ফ্রুট গার্ডেন নার্সারি অ্যান্ড অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. হজরত আলী।
রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য উৎপাদন শ্রেণিতে দুটি প্রতিষ্ঠান এআইপি নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন গাজীপুর সদর উপজেলার লিভিং আর্ট গার্ডেনের পরিচালক কে এম সবুজ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের কৃষি উদ্যোক্তা মোহা. রফিকুল ইসলাম।
স্বীকৃত বা সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত কৃষি সংগঠন শ্রেণিতে তিনজনকে এআইপি নির্বাচিত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাইখ সিরাজ, চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন তিলোত্তমার প্রতিষ্ঠাতা সাহেলা আবেদীন ও সাতক্ষীরার ধানদিয়া সিআইজি মহিলা সমবায় সমিতির সভাপতি শিখা রানী চক্রবর্তী।
এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদক পেয়েছেন এমন তিনজনকে ২০২১ সালের জন্য এআইপি নির্বাচন করা হয়েছে। তাঁরা হলেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার অন্নপূর্ণা অ্যাগ্রো সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী রাম নিবাস আগরওয়ালা, ঢাকার নবাবগঞ্জের অমিত ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মায়া রানী বাউল ও পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মো. আবদুল খালেক।