আর্থিক প্রতিষ্ঠানও একীভূত করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী দুর্বল ও সবল ব্যাংক একীভূত হবে। এই উদ্যোগ সফল হলে দুর্বল নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) মধ্যে একীভূতকরণ শুরু করার পরিকল্পনা করছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি প্রম্পট কারেকটিভ অ্যাকশন (পিসিএ) চালু করেছে। এই কাঠামোর অধীনে সবল ব্যাংকগুলোর সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত হবে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু এনবিএফআই একত্রিত করা হলে অপারেশনাল খরচ কমাতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক ঋণ অনিয়ম কমিয়ে আনবে। এসব ঋণ অনিয়মের ফলে খাতটিতে তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে।

জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ কিছু দুর্বল এনবিএফআইকে সম্ভাব্য একীভূতকরণ এবং অধিগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে বলেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান একিভূত করতে প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ব্যাংক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতেই একীভূতকরণ বা অধিগ্রহণ শুরু করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

দেশের ব্যাংকবহির্ভূত দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি এখন ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণও খারাপ হয়ে পড়ছে। ফলে এ খাতে খেলাপি ঋণ বাড়ছেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা বেড়েছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা, যা এই খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের ২৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুরবস্থা নতুন নয়। আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে অনিয়ম করেছেন, পুরো খাত এখন তার জের টানছে। পি কে হালদারের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় ছিল, এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যে কারণে সার্বিকভাবে এ খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে।