মামুনুল হকসহ হেফাজতের ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে (২৬ মার্চ) বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলামের ১৭ জন নেতার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (৫ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দফতর সম্পাদক খন্দকার আরিফ-উজ-জামান বাদী হয়ে মামলা করেন। পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক সাংবাদিকদের কাছে মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় সাধারণ মুসল্লিদের ওপর হামলার পাশাপাশি দেশব্যাপী নৈরাজ্য তৈরির পরিকল্পনার অভিযোগ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সরকার পতনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়েছে মামুনুলসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

মামলার অপর আসামিরা হলেন— যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা লোকমান হাকিম, যুগ্ম মহাসচিব নাসির উদ্দিন মনির, নায়েবে আমির মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী, নায়েবে আমির ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সাজেদুর রহমান, লালবাগের মাওলনা হাবিবুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মাসুদুল করিম, মুফতি মনির হোসেন কাসেমী, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী, মাওলানা ফয়সাল আহমেদ, মাওলানা মুশতাকুন্নবী, মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের, মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ তৈয়ব।

মামলার এজাহারে বাদী আরিফ-উজ-জামান বলেন, তিনি ওয়ারী ব্যাংকিন স্ট্রিটের বাসিন্দা। গত ২৬ মার্চ তিনি বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। ফরজ নামাজ শেষে তিনি মসজিদের ভেতরে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ধর্মান্ধ ব্যক্তিদের জুতা প্রদর্শনসহ নানা ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিতে দেখেন। ঐ অবস্থায় দুপুর দেড়টার দিকে জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হলে তিনি উত্তর গেটের সিঁড়িতে কয়েক হাজার জামায়াত-শিবির-বিএনপি-হেফাজতের উগ্র মৌলবাদী ব্যক্তিদের উচ্ছৃঙ্খল জমায়েত দেখতে পান।

আরো পড়ুন- মামুনুল হককে পুলিশের কাছ থেকে ‘ছিনিয়ে নিল’ তার সমর্থকরা

এজাহারে বাদী লিখেছেন, ‘উল্লেখ্য যে, তাদের স্লোগান ও নিজেদের কথোপকথন থেকে জানিতে পারি যে, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বে শীর্ষস্থানীয় জামায়াত-শিবির-বিএনপি-হেফাজত নেতৃবৃন্দ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে দেশি-বিদেশি সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিকে বানচাল করার ও ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করে। উক্ত জমায়েত থেকে রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী নানা জঙ্গি স্লোগান দিতে থাকে। হেফাজত ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের প্রত্যক্ষ নির্দেশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে উক্ত ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের নিমিত্তে দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ দা, ছোরা, কুড়াল, কিরিচ, হাতুড়ি, তলোয়ার, বাঁশ, গজারি লাঠি, শাবল ও রিভলবার, পাইপগানসহ অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত আমিসহ অন্যান্য সাধারণ মুসল্লিগণের ওপর হামলা করে।’