রোহিঙ্গা বিষয়ক সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের টানাপোড়েনের মধ্যেই দেশটি থেকে চাল কিনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।‘খুব শীঘ্রই এ বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে এবং এপ্রিলের মধ্যে ধাপে ধাপে চাল দেশে আনা হবে’
দেশের খাদ্যসংকট মোকাবেলায় মিয়ানমারের কাছ থেকে এক লক্ষ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিগত বছরের বন্যায় ফসলের ক্ষতি এবং ত্রাণ কার্যক্রমে প্রায় শূন্য হয়ে যায় চালের মজুদ। এজন্য রোহিঙ্গা সংকটকে পাশ কাটিয়েই এ সিদ্ধান্ত নিতে হলো সরকারকে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, “চালের মূল্য, বাণিজ্য বীমা ও আন্তঃপরিবহনসহ সব খরচ হিসেবে প্রতি টন ৪৮৫ মার্কিন ডলার মূল্যে বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় আন্তঃসরকার চুক্তির (জি-টু-জি) আওতায় চাল ক্রয় করবে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, খুব শীঘ্রই এ বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে এবং এপ্রিলের মধ্যে ধাপে ধাপে চাল দেশে আনা হবে।
এক সাক্ষাতকারে নাজমানারা রয়টার্সকে বলেন, ’’আমাদের মুল লক্ষ্য চালের দাম স্থিতিশীল করা’’। তিনি আরও উল্লেখ করেন, চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে সরকারিভাবে ১ কোটি টন এবং বেসরকারি আমদানিকারকগণ আরও এক কোটি টন চাল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
প্রায় দশ লক্ষ মুসলিম রোহিঙ্গা শরণার্থীর অধিকাংশই ২০১৭ সালে সামরিক বাহিনী পরিচালিত অভিযানের সময় এসেছে। জাতিসংঘ বিষয়টিকে গণহত্যা বলে উল্লেখ করেছে। যদিও মিয়ানমার শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান “নাফেড” থেকে আরও দেড় লক্ষ টন খাদ্য শস্য আমদানির বিষয়ে কয়েক দফায় টেন্ডার প্রকাশ করা হয়েছে।
আরো পড়ুন- মিয়ানমারকে বিনামূল্যে টিকা দিচ্ছে ভারত
ইতোমধ্যে ভারতের বেশ কিছু রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠানের সাথে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘’আমরা ভারত থেকে আন্তঃসরকার চুক্তির মাধ্যমে আরও চাল আমদানি করতে পারবো।‘’
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর প্রায় সাড়ে তিন কোটি টন চাল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে উৎপাদনের দিক থেকে বাংলাদেশে বিশ্বে তৃতীয়। তবে বন্যা, খরা বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানার প্রেক্ষিতে খাদ্যশস্যের চাহিদা পূরণে অনেকসময় বাংলাদেশ চাল আমদানি করে থাকে।