কর্মক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন

আমরা প্রতিদিন দিনের একটা বড় সময় কর্মক্ষেত্রে ব্যয় করি । ক্লায়েন্টদের সঙ্গে কাজ করা, চুক্তি নিয়ে বোঝাপড়া, বিভিন্ন রকম আইডিয়া উপস্থাপনসহ প্রতিদিনই ব্যস্ত সময় পার করতে হয় অফিসে। অনেক সজাগ থাকার পরও ছোটখাট কিছু না কিছু ভুল হয়ে যায়। যাই হোক, যে ভুলগুলো আমরা প্রায়ই কর্মক্ষেত্রে করে থাকি, তা সবসময়ই যে অফিশিয়াল কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত তা কিন্তু নয়।

মনে রাখতে হবে- কর্মক্ষেত্রে নেতিবাচকতা একটি ভাইরাসের মতো। যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য সব ধরনের মানুষই প্রয়োজন। তরুণ পেশাজীবীদের নিজেকে স্থির হতে হবে। কখন কোথায় থামতে হবে, কখন কোথায় ছুটতে হবে, তা জেনে পদক্ষেপ নিতে হবে। লাগামহীন রকেটের গন্তব্য যেমন অনিশ্চিত, তেমনি নিজেকে স্থির করা শিখতে না পারলে পেশাজীবনে সাফল্য বেশ দূরের বিষয়ই মনে হতে পারে।

চলুন আমরা অফিসের কিছু শুদ্ধাচার সম্পর্কে জেনে নি-

– কথা বলতে বলতে আঙুল ফোটানো, মাথা, ঘাড় বা কান চুলকানো।

– অকারণে নাক টানা বা কাশি দেয়া।

– বিশেষ দায়িত্ব বা নির্দিষ্ট বিরতির সময় ছাড়া অফিসের বাইরে যাওয়া। কোথাও গেলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করা।

– রূঢ় কণ্ঠে ও রাগান্বিত স্বরে আঙুল উঁচিয়ে কথা বলা।

– গ্রুপিং/ লবিং/ অফিস পলিটিকস করা।

– অন্যদের কাজের ব্যাপারে অহেতুক কৌতূহলী হওয়া।

– মধ্যাহ্ন বিরতিতে বেশি সময় নেয়া, যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া প্রায়শই অফিস শুরুর পরে আসা, নির্ধারিত সময়ের আগে অফিস ত্যাগ করা।

– অফিসে অভ্যাগতদের সামনে উচ্চকণ্ঠে নিজেদের মধ্যে কথা বলা/ ব্যক্তিগত আলাপ ও হাস্যপরিহাস করা।

– আপ্যায়নে অতিরিক্ত খরচ করা।

– অফিসের গাড়ি, ফোন বা কোনোকিছু ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা।

– অপ্রয়োজনে লাইট ফ্যান এসি কম্পিউটার চালিয়ে রাখা।

– মিটিং/ কনফারেন্সে প্রধান কর্মকর্তা বা অতিথির আসন গ্রহণের সময় বসে থাকা।

– অহেতুক শব্দ করে অন্যের বিরক্তির কারণ হওয়া।

– এ প্রতিষ্ঠানে আমিই একমাত্র কাজ করি আর কেউ করে না–এই মানসিকতা পোষণ করা।

– কাজ শেষে ফাইল/ ব্যবহৃত জিনিস যথাস্থানে না রাখা।

– নিজ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য অন্যের কাছে বলা।

– যে তথ্য দেয়া যাবে না তা দেবো বলে অন্যকে আশায় রাখা।

– কাজ ফেলে অন্যের ডেস্কে বা ক্যান্টিনে গালগল্পে/ আড্ডায় মেতে ওঠা।

– অন্য ডিপার্টমেন্ট বা অন্যের কাজ নিয়ে সর্বদা সমালোচনা করা।

– কোনো সহকর্মীর দুর্বলতা নিয়ে ঠাট্টাবিদ্রুপ করা বা সেই বিষয় নিয়ে অন্য কারো সাথে কথা বলা।

– সহকর্মীর পোশাক ও সাজসজ্জা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা।

– অপরের অর্জন/ আইডিয়া নিজের বলে প্রতিষ্ঠা করা ও কৃতিত্ব নেয়া।

আরও পড়ুন:- ওজন বাড়াতে কলার মিল্ক-শেক

– টিমওয়ার্কের ক্ষেত্রে ‘এটা তো আমি করি নি বা আমার করার কথা নয়’–এ ধরনের কথা বলে দায় এড়ানো।

– কর্মপরিমণ্ডলে বয়সে ছোট-বড়, ঊর্ধ্বতন-অধস্তন পদ নির্বিশেষে যে-কাউকে ‘তুমি’ বা ‘তুই’ সম্বোধন করা।

– ইচ্ছেমতো ছুটিতে চলে গিয়ে তারপর ফোন করে বা মেসেজ দিয়ে কর্তৃপক্ষ/ঊর্ধ্বতন/সহকর্মীকে জানানো।

– সহকর্মীর কাজের জায়গায় উঁকি দেয়া। কেউ কম্পিউটারে কী করছে, কী বই/ ডকুমেন্ট পড়ছে, কী লিখছে–এ ব্যাপারে অতি আগ্রহ পোষণ করা।

– টিমওয়ার্কে শুধু নিজের ভালো লাগাকেই প্রাধান্য দেয়া। ‘আমি বুঝতে পারছি কিন্তু আর কেউ বুঝছে না’–এমনটি ভাবা।

– সহকর্মীর ব্যস্ততা দেখেও এই মুহূর্তে প্রয়োজন নেই বা জরুরি নয়–এমন বিষয়ে তার সাথে কথা বলতে যাওয়া।

– সহকর্মীর বিনা অনুমতিতে তার কোনো কাগজ ধরা বা পড়া।

– ছুটির আগে কাজ জমিয়ে রাখা এবং ছুটির পরে এসে তা ভুলে যাওয়া।

– ছুটির আগের ও পরদিন ঢিলেঢালাভাবে থাকা, পূর্ণ সময় অফিস না করা।

– ছুটিতে যাওয়ার আগে নিজের দায়িত্ব বা কাজ কাউকে বুঝিয়ে না দেয়া।

– ছুটিতে থাকাকালে অফিসের জরুরি কল রিসিভ না করা/ ফোন বন্ধ রাখা।

– ছুটি শেষে নির্ধারিত দিনে কাজে যোগদান না করে বলা–’… ফেরার টিকেট পাই নি’।