সাংবাদিক মিজান মালিকের কাব্যগ্ৰন্থ মায়াতন্ত্র’র মোড়ক উন্মোচন

সাংবাদিক মিজান মালিকের

সৃজনশীল লেখক, সাংবাদিক ও কবি মিজান মালিকের তৃতীয় কাব্যগ্ৰন্থ মায়াতন্ত্র’র মোড়ক উন্মোচন করা হলো। বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মায়াতন্ত্র কাব্যগ্ৰন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) হাবিবুর রহমান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর মহাপরিচালক আনজীর লিটন ক্রাবের সভাপতি কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ও শ্রাবন প্রকাশনীর কর্ণধার রবিন আহসান, ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি মধুসূদন মন্ডল, ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার পলাশ মায়াতন্ত্র নিয়ে কথা বলেন‌।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, মিজান মালিক একজন পেশাদার পেশাদার সাংবাদিক বা শিক্ষক হয়ে‌ই থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি কখনো সেখানে সীমাবদ্ধ থাকেননি। তিনি যেগুলো কাজ করেন সবগুলো জ্ঞানচর্চার । তিনি দীর্ঘদিন ধরে কবিতা গান ও ছোটগল্প লিখে আসছেন। নতুন যে বইটি প্রকাশ করেছেন তার নাম মায়াতন্ত্র।‌ মায়া বলতে সহজে আমরা ভালোবাসা এবংফিলিংস্কে বুঝি। আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। মায়া হারিয়ে যাওয়া মানে ভালোবাসা হারিয়ে যাওয়া। মায়া এবং ভালোবাসা দুটি শব্দ একটি শব্দের প্রতিশব্দ। এজন্য আমি মনে করি, আজকের দিনটির সাথে মায়াতন্ত্রর একটি মিল রয়েছে।

বইয়ে যে কবিতাগুলো আছে আমি বুঝতে পেরেছি সেগুলো প্রেম প্রকৃতি নিয়ে লেখা। প্রেম দ্রোহ বিষন্নতা অপ্রাপ্তি সৃজনশীলভাবে উঠে এসেছে তার কবিতায়। ৬৭ টি কবিতা নিয়ে বইটি বেড়িয়েছে জার মূল্য ২৫০ টাকা। বইটির ছাপা, মলাট বিন্যাস অঙ্গসজ্জা সবই অতুলনীয়। আমি মনে করি, বইটি পাঠকপ্রিয়তা পাবে। বইটির বহুল প্রচার এবং প্রসার কামনা করি। এ সময় তিনি ২০ কপি মায়াতন্ত্র কিনে নেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, দ্রব্যমূল্য যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং কেউ যেনো
কারসাজি করতে না পারে আমরা সেদিকে নজর রাখছি। কেউ যাতে বাজারে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি না হয় সেজন্য সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমাদের দেশে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর তৈরি করা হয়েছে। তারা সুন্দরভাবে কাজ করছে। ঢাকা মেট্রোপলিটনসহ সারাদেশে আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছি এবং সর্বাত্মকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এই রমজান মাসে কোন কুচক্রী মহল যেনো বাজার অস্থিতিশীল করতে কাজ না করতে পারে সেজন্য আমরা তাদের সাথে কাজ করব। আশাকরি দ্রব্যমূল্য ক্রমসীমা এবং সহ্যসীমার ভেতরে রাখতে সক্ষম হব।
মোবাইল কোট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই আছে। এজন্য আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।‌ রমজান শুরুর আগেই আমরা আমরা এই কার্যক্রম শুরু করব।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর মহাপরিচালক আনজীর লিটন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, আজ মনে হয় মিজান মালিকের জন্যই বসন্ত এসেছে। মিজান মালিকের সঙ্গে আমি একই হাউজে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। তার মধ্যে আমি সে সময় যে প্রতিভা দেখেছিলাম, সেটিকে নিয়ে তিনি এগিয়ে চলছেন। তার পেশা এবং লেখালেখি দুটোকেই সমনভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে আমি মনে করি তিনি সার্থক । মায়াতন্ত্র বইটিতে মিজান মালিক যে নতুন একটি ভাষা দিয়েছেন, আশা করি বইটি পড়লে সেটা আপনারা অনুভব করতে পারবেন। মিজান মালিক সাহিত্য এবং বইয়ের প্রতি ভালোবাসা সবসময় অব্যাহত রাখবেন‌ বলে আমার বিশ্বাস।

বইয়ের লেখক মিজান মালিক বলেন, একটি উপন্যাসের ভেতরে যেমন অনেকগুলা চরিত্র থাকে, একজন লেখকের ভেতরে তেমন অনেকগুলো মনন থাকে। আপনি যা লেখেন সেটা কখনো আপোষ করতে পারেন না। সব সময় নিজের বিশ্বাস থেকে লিখতে হয়। একজন লেখককে অনেক কষ্ট অনেক শ্রম এবং অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। পূর্বে প্রকাশিত দুটি বইয়ের প্রসঙ্গ টেনে মিজান মালিক বলেন, আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ গল্প ছাড়া মলাটের মত মায়াতন্ত্রও আশা করি ভালো লাগবে। আমাদের অসংখ্য গল্প হারিয়ে গেছে। চিন্তা হারিয়ে গেছে। আমাদের ভাষা হারিয়ে গেছে। মননশীল হারিয়ে গেছে। এই জায়গা থেকে ২০২১ সালে গল্প ছাড়া মলাট বইটি লিখেছিলাম। তার‌ই ধারাবাহিকতা মায়াতন্ত্র। আজকে আমাদের মায়া খুবই দরকার। আমরা মায়াহীন নিষ্ঠুর মানুষে দিনে দিনে পরিনত হয়ে যাচ্ছি। এই মায়াটা প্রতিষ্ঠিত। মানুষে মানুষে বন্ধনে রাখবার জন্য মায়াটাও একটি প্রাতিষ্ঠানিক জায়গায় আসা দরকার। সেই জায়গায় থেকে মায়াতন্ত্র নামটা বাছাই করা।

শ্রাবণ প্রকাশনীর কর্ণধার রবিন আহসান বলেন, কবি হিসাবে মিজান মালিক অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত, তা বোঝা যায় তার বইয়ের নাম শুনলেই। শুধু সাংবাদিক হিসেবেই নয়, কবি হিসাবেও মিজান মালিক প্রতিষ্ঠিত। তার কবিতার গাঁথুনি চমত্কার।

ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান বলেন, ক্রাইম রিপোর্টাররা শুধু ক্রাইম রিপোর্ট ই করেন না, তার প্রমাণ মিজান মালিক ভাই। মায়াতন্ত্র যে কি জিনিস এর সাথে আমরা পরিচিত ছিলাম না। কিন্তু এই বইয়ের মাধ্যমে আমরা তা জানতে পারব।