বিদায়ী অনুষ্টানে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পিতা-মাতার চরণ ধৌত

টাংগাইল জেলার সর্বোত্তরের উপজেলা মধুপুরের শালিকা জাফর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্টিত হয়েছে।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি, গোল্ডেন হার্ভেস্ট গ্রুপ অফ কোম্পানির জি এম ও কোম্পানি সচিব , অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জাফর আলী, এফসিএস। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন উক্ত বিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, অবিভাবক বৃন্দ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে বিদায়ী শিক্ষার্থীরা তাদের অভিবাবকদের চরণ ধৌত করিয়ে আশীর্বাদ গ্রহণ করেছে। আশীর্বাদ গ্রহন মূহুর্তে উপস্থিত সকলে করতালির মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তুলে। এবং বিউগলে ভেসে উঠে পিতামাতার প্রতি সন্তানের ভালোবাসার প্রতিধ্বনি। এরকম ঘটনা প্রশংসার দাবি রাখে। এসময় অনেক অবিভাবক অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন এবং নিজ নিজ সন্তানদের আশীর্বাদ পূর্বক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এ বিষয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মোহাম্মদ জাফর আলী জাফর আলী দেশ সমাচার কে বলেন, নৈতিক শিক্ষার অবক্ষয় ও সামাজিক মূল্যবোধের অভাবে বর্তমানে পিতামাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্বহীনতা বেড়েই চলেছে। এই প্রেক্ষাপটে দেশে অহরহ বৃদ্ধাশ্রম গড়ে উঠার উদাহরণ দিয়ে তিনি আরো বলেন, উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে পিতা-মাতার সাথে সু-সম্পর্কে বজায় রাখতে পারে সে লক্ষে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত ব্যাতিক্রম-ধর্মী এই অনুষ্ঠান টি পাহাড়িয়া-লালমাটি অঞ্চলে নৈতিক শিক্ষার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দ মনে করেন, এই অনুষ্ঠানটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শিক্ষা-স্বরুপ ভূমিকা পালন করবে।

পিতামাতার চরণ ধৌত অনুষ্ঠানে অবিভাবকদের জন্য একটি করে জায়নামাজ উপহার দেওয়া হয়, যাতে তারা নামাজ আদায় করে সন্তানের জন্য দোয়া করতে পারে। এবং সন্তানদেরকে একটি করে পানির পাত্র দেওয়া হয় তারা যেনো প্রতিদিন পিতা-মাতা গণকে চরণ ধৌত করাতে পারে। আর এভাবেই “সোনার বাংলা” গড়ার প্রত্যয়ে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীগণ।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মাজহারুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মঙ্গল কামনা করি এবং তারা যেনো ভালো ফলাফল করে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারে সেজন্য দোয়া ও আশীর্বাদ রইলো।

পিতামাতার চরণ ধৌত করনের মাধ্যমে আশীর্বাদ গ্রহণের অনুষ্ঠানটি এলাকায় রীতিমতো প্রসংশনীয় হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি অত্র বিদ্যালয়ের জন্য এটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিগত দিনে বিদ্যালয়টি অনেক ভালো ফলাফল সহিত সহ-পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া নানা বেসরকারি উপবৃত্তির পাশাপাশি সরকারি উপবৃত্তি অর্জন করে অত্র অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিক সহায়তায় বিদ্যালয় টি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।

উল্লেখ্য, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বে এলাকা টি অনেকাংশেই নিরক্ষর ছিলো বলে জানা যায় এবং পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের কারণে, এলাকার অনেক ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করে দেশ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করছে।