মূল্যস্ফিতি! ভাগা ও ১ পোয়ার অর্থনীতি

আবু দারদা যোবায়ের

আবু দারদা যোবায়ের : দেশের শ্রমজীবি ও নিম্ন আয়ের মানুষের মত আমিও মূল্যস্ফিতি, মুক্তবাজার অর্থনীতি, মুদ্রানীতি, বাজারে সিন্ডিকিটের দৌড়াত্ব এগুলো তুলনামূলক কম বুঝি। অর্থনীতির ছাত্র না হওয়ায় অনেকের মত টাকাকড়ির নানা মারপ্যাঁচ বুঝতে বেশ সময় লাগে আমারও।

বাজারের ব্যাগ ভরে সস্তায় বেশী নিত্য পন্য কিনতে পারলেই আমি বেশ খুশি। এমন যখন অবস্থা তখন মিডিয়া জুড়ে ” বাজারে নিত্য পন্যের দাম বেশ চড়া। রোজাকে সামনে রেখে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। বাজারে আগুন ! কোন কিছুতেই হাত দেয়া যায় না। ক্রেতাদের নাগালের বাইরে প্রতিটি নিত্যপন্য।”

কৃষিপন্যের ন্যায্য মূল্য থেকে কৃষক বঞ্চিত। বাজারে সরবরাহ বেশী থাকলেও দাম বেশ চড়া। চাহিদার চেয়ে যোগান কম। মৌসুমেও সবজির বাজারে সরবরাহ কম। মনিটরিং করবে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়।

ভোক্তা অধিকারের অভিযান শুরু ! নিত্য পন্যের দাম সহনীয় করতে লাগাম টেনে ধরা হবে! কত কত রকমের হেডিং-হেড লাইন পত্রপত্রিকা, টিভিচ্যানেল ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল আর সামাজি যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে জুড়ে। তাতে কি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কিছু আসে যায়? উত্তর টা হলো না। তারা চান তাদের আয়ের সাথে মিল রেখে ব্যয়। সব খরচ বাদ দিয়ে মাস শেষে কিছু টাকা যদি জমানো অর্থাৎ ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা যায় কিনা। এই চিন্তাই মাথায় থাকে স্বল্প আয়ের মানুষজনের।

একে অপরকে দোষারোপের যে সংস্কৃতি অর্থনীতে অস্থিরতা তৈরি করেছে তখন নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনযাত্রা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। নিয়মিত বাজারে না গেলে তা মূল্যস্ফিতি(বলতে আমি যা বুঝি সপ্তাহ কিংবা মাসের ব্যবধানে আগের চেয়ে কোন জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়া) কি জিনিস তা অনুধাবন করা মুশকিল। অপারিবারিক প্রয়োজনে আমাকে অনেকের মতো প্রতিদিন কোন না কোন নিত্য পন্য কিনতে হয়।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে তুলনামূলক কম দামে নিত্য পন্য কেনা আমার পছন্দের তালিকার রুটিন কাজ। এখন বাংলা মাঘ মাসের মাঝামাঝি। এই সময়ে শাক সবজিতে বাজার ছয়লাব হয়ে যাবার কথা। তুলনামূলক কেজি প্রতি সবজির দাম ত্রিশ ৪০ টাকা থাকার কথা কিন্তু এই দামে স্থির নেই।

গতকাল ২৮ জানুয়ারী কোন কোনবাজারে নতুন আলু ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তার আগের দুই সপ্তাহের বেশী সময় ৫০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত আলুর দাম উঠানামা করেছে। আলুর ভর্তা দিয়েও ভাত খেতে অনেকে হিমশিম খেয়েছেন। আবার ডালের দামও বেশ চড়া। কেজিপ্রতি রকমভেদে ডালের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা।

মূল্যস্ফিতির যুগে কম করে কিনে খেতে চান যারা তাদের জন্য পেঁপে ৪০ টাকা কেজি, ছোট মাঝারি সাইজ গাজর ৩০ টাকা কেজি, মিষ্টি কুমড়া ১ ফালি ২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০ টাকা ভাগা, রসুন ৩ পিস ৭৫ গ্রাম ২০ টাকা, আদা ২০ টাকা ভাগা !

নানা পদের তরিতরকারি ও সবজি এখানে ১ পোয়া (২৫০ গ্রাম) থেকে ১ পর্যন্ত বিক্রি হয়। চলে আসুন স্বচক্ষে দেখে কিছু কিনতে পারেন নিম্ন মধ্যবিত্ত ও শ্রমজীবি খেটে খাওয়া মানুষের বাজারের অভিজ্ঞতা নিতে রাজধানীর খিলগাঁও থানার সিপাহি বাগ বাজার।

লিখেছেন : আবু দারদা যোবায়ের, সিনিয়র সাংবাদিক