কৃষি গবেষণায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে : সুধীর চন্দ্র নাথ

সুধীর চন্দ্র নাথ

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষিতে আরও বেশী করে গবেষণা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সুধীর চন্দ্র নাথ। বলেছেন, কৃষিতে নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন হলে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে টেকসই উৎপাদন অব্যাহত থাকবে এবং দেশের প্রয়োজন মিটবে।

বিজনেস নিউজ পোর্টাল দেশ সমাচারের সাথে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন সুধীর চন্দ্র নাথ।দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান এসিআই লিমিটেড এর এসিআই সীড এর বিজনেস ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এই কৃষি উন্নয়ন ব্যক্তিত্ব। তিন দশক ধরে বাংলাদেশের বীজ ব্যবসার সাথে জড়িত সুধীর চন্দ্র নাথ। তার হাত ধরেই বেসরকারি খাতে নতুন নতুন জাতের বীজ সম্প্রসারণ হচ্ছে।

দেশ সমাচারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কৃষির সাথে নিজের জীবনের জড়িয়ে যাওয়ার গল্প করেন। জানান, ১৯৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সয়েল সাইন্স-এ মাস্টার্স করার পর সেবছরই ব্র্যাক এর একজন উন্নয়ন কর্মী হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে ম্যানেজমেন্টের উপর এশিয়ান ইন্সটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট, ফিলিপাইন্স থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

১৯৮৬ সালে বিদেশে থেকে সবজী বীজ এনে কৃষকদের সরবরাহ করার মাধ্যমে পুরোপুরি জড়িয়ে পড়েন কৃষি ব্যবসার সাথে। সফলতার গল্পের শুরু হয় ১৯৯৩ সালে। সেসময় বাংলাদেশে কম্পোজিট ভূট্টার বীজের প্রচলন ছিল কিন্তু ১৯৯২-৯৩ সালে ব্র্যাক এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে ভূট্টা প্রমোশন প্রকল্পের সাথে যৌথভাবে ৩০০ উপজেলায় হাইব্রিড ভূট্টার সম্ভাবতা যাচাইয়ের জন্য ট্রায়াল করা হয় এবং অবশেষে সেই প্রকল্পটি সফলতার মুখ দেখে। তারপর অর্থাৎ ১৯৯৪ সাল থেকেই বাংলাদেশে হাইব্রিড ভূট্টা আবাদের যাত্রা শুরু হয়।

১৯৯৮ সালের বন্যার পর বাংলাদেশ সরকার ৪ টি হাইব্রিড জাতের ধান ছাড়করণ করেছিল, যার মধ্যে এসিআই লিমিটেডের একটি এবং এফ.আর মালিক সীড কোম্পানির একটি জাত ছিল। সেই ২টি জাত নিয়ে বাংলাদেশে হাইব্রিড ধান চাষ সম্প্রসারণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেন সুধীর চন্দ্র নাথ।

এসিআই এগ্রিবিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট ডঃ এফ এইচ আনসারীর সাহসী ভূমিকার জন্য আজ হাইব্রিড ধান চাষ সম্প্রসারণের গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। এরপর অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে ব্র্যাকের টিস্যু কালচার ল্যাব এর আলু উৎপাদনে দারুণ সফলতা পান সুধীর চন্দ্র নাথ।

২০১৬ সালের নভেম্বরে ব্র্যাক এর সাথে দীর্ঘ পথচলার সমাপ্তি হয় সুধীর চন্দ্র নাথের। এরপর সেবছরের ডিসেম্বরেই এসিআই সিড এ যোগদান করেন।

দেশ সমাচারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি কৃষিতে গবেষণার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। এ খাতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহজ শর্তে ঋণ দেয়া গেলে কৃষিখাত আরও টেকসই হবে এবং পাশাপাশি দেশও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে।

দেশ সমাচারকে দেয়া সাক্ষাৎকারের ভিড়িও লিংক দেখতে ক্লিক করুন :