সাভারের বনগাঁও ইউনিয়ন বাসীর বেহাল সড়কের দূর্ভোগ

বলিয়ারপুর থেকে বনগাঁও যাওয়ার প্রায় দশ কিলোমিটার রাস্তাটি সংস্কার হয় না দীর্ঘদিন। রাস্তা সংস্কারের জন্য বহু বার আন্দোলন করেছেন গ্রামবাসীরা। প্রশাসনের তরফে শুধু প্রতিশ্রুতি মিললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কয়েক মাস আগে গান্ধারিয়া থেকে বেড়াইদ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা এখন বন্ধ হওয়ায় বাকি রাস্তার অবস্থা আরো খারাপ। এতে ওই রাস্তা দিয়ে চলতে আতঙ্ক অনুভব করেন এলাকাবাসী।

রাস্তার বেহাল দশার কারনে সন্ধ্যার পর থেকে কোন গাড়ি চলে না। বেড়াইদ বিজ্র থেকে গান্ধারিয়া পযন্ত গাড়ি চলতে পারে না এতটাই বেহাল দশা। যা বৃষ্টির পর আরো খারাপ হয়ে যায়। তবে এলাকাবাসী বলেন কাজ ফের কবে শুরু হবে তা জানা নেই। এই পথ দিয়ে সহজে গাড়ি চলে না। সড়কটির কোথাও খানাখন্দে ভরা, আবার কোথাও উঁচু-নিচু হয়ে আছে। ভাঙ্গা রাস্তা এবং সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তির সীমা নেই।

রিকশার চাকা গর্তে পড়ে অনেকেই আহত হওয়ার ঘটনা এখন এই এলাকায় নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। রাস্তা বেহাল হওয়ায় এই জায়গায় প্রায়শই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান রিকশা চালকরা। এলাকার বাসিন্দা ফিরুজ খান বলেন, এই সড়ক দিয়েই সাধাপুর, কাজীপাড়া, চাকুলিয়া, নিকরাইলসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে। এ ভাঙ্গাচোড়া রাস্তায় অসুস্থ কোন রোগীকে হাসপাতালে নেওয়াটাও মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একাধিক রিক্সা চালক বলেন, ভাঙ্গা সড়কে চলাচলের কারণে তাদের ব্যাটারিচালিত রিকসায় বেশী চার্জ দিতে হয়। তাই খরচ বেশী লাগে। এছাড়া অনেক সময় রিকসা ক্ষতিগ্রস্তও হয়। তাই বাধ্য হয়ে ভাড়া বেশী নেওয়া হয়।

ঢাকা জেলার সাভার থানার বলিয়ারপুর হলো বনগাঁও ইউনিয়নের অন্তভূর্ক্ত। বনগাঁও ইউনিয়ন কার্যালয়টি কোন্ডাতে অবস্থিত। অত্র এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ সরকারী অফিস, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা এনজিও প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্যিক জোনের সন্নিকটে থাকায় ব্যবসায়িদের নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি হওয়ায় ব্যবসা বানজ্যিরে প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ৫-৭ টি অটো রাইস মিল ও অসংখ্য ক্ষুদ্র ও স্থায়ী দোকানদারগন বিভিন্ন প্রকারের পন্য সামগ্রী সার্বক্ষনিক বেচাকেনা করে। স্থানীয় উদ্যোক্তাগণ অসংখ্য শিল্প, কল কারখানা তৈরি করে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।

কিন্তু বলিয়ারপুর মহল্লার বাসিন্দারাই রয়েছেন অবহেলিত। বিগত ১৫ বছরেও গেন্ডা সড়কের কোন সংস্কার কাজ করেনি ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ। একই রকম অবস্থা গেন্ডা থেকে কাজীপাড়া পযর্ন্ত রাস্তার। নামা গেন্ডা হয়ে পুরানবাড়ী, সাধাপুর কাজীপাড়া চাকুলিয়া লোকজনের একমাত্র রাস্তা সাভার যাওযার জন্য। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই তা খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। ২০০০ সালের পর আর কোনও রকম রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। এ রকম খারাপ রাস্তা দিয়ে গাড়ির চালকেরাও ভয়ে ভয়ে গাড়ি চালান। প্রায়দিন এই রাস্তা দিয়ে যেতে গিয়ে গাড়ি খারাপ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়ে স্কুল প়ড়ুয়া ও অফিস যাত্রীরাও। রাস্তা খারাপের জন্য সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছনো যায় না। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অমিত কুমার পাল বলেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই এলাকায় আসি। যদি এখানকার স্কুলে চাকরি না করতাম তা হলে এই রাস্তা দিয়ে কখনও আসতাম না।

শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ছাড়া এই এলাকা কৃষি প্রধান হওয়ায় গ্রামের কৃষকেরাও ফসল হাটে নিয়ে যান এই রাস্তা দিয়ে। স্থানীয় স্কুল পড়ুয়া ছাত্র আব্দূস সামাদ রবিন বলে, খানাখন্দে রাস্তা ভরা। রাতে ও দিনে মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে গিয়ে এই ভাঙা রাস্তায় প্রায়শই ঘটে দুর্ঘটনা। রাস্তায় এমনই কাদা হয় যে গাড়ি রাস্তার ধারে বাড়ি হওয়ায় গাড়ি গেলেই বাড়িতে কাদা ছিটকে আসে বলে জানান এলাকার বাসিন্দা হাপিজা খাতুন, রেসমা আক্তার। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার করতে হবে। না হলে এই রাস্তার জন্য বাড়িতেও ঠিকমতো থাকা যাচ্ছে না।