জনপ্রতিনিধি হোক জনগনের আস্থার নাম

জনগন যাকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের প্রতিনিধি বানান তিনিই জনপ্রতিনিধি। জনগনের বন্ধু। বিপদে-আপদে জনগন তাকেই খুঁজবে এমনটাই বিশ্বাস থাকে। একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার গুলো ঠিক মত পূরণ হচ্ছে কি? নাগরিক কোন সমস্যা পোহাচ্ছে কি? এমন কি সর্বোপরি নাগরিকের কল্যান সাধনে ব্রত হয়ে কাজ করাই জনপ্রতিনিধির কাজ। আমরা একটি উন্নত সমাজে, ডিজিটাল সমাজে বাস করছি। নিঃসন্দেহে এটি বলার উপায় রাখে না যে আমরা উন্নত হচ্ছি না।

পৃথিবীটা অনেক সহজ থেকে সহজতর হয়ে যাচ্ছে। ঘুম থেকে উঠে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত মানুষ কিন্তু প্রযুক্তির আশির্বাদটাকে সাথে করে নিয়েই জীবন চালাচ্ছে। এই ডিজিটাল সময়ে রাজনীতিবিদদের ও ডিজিটাল হওয়া চাই। সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে না পারলে “গ্রাম হবে শহর” কথাটি স্বপ্নেই থেকে যাবে।

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই জানেন না একজন জনপ্রতিনিধির কাজ কি? রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা, জনগনের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করাই মুখ্য কাজ। সে ধারাবাহিকতায় দ্রুত সময়ে নাগরিকের সমস্যা সমাধান করা লোককেই জনপ্রতিনিধি বানালে ইউনিয়ন তথা এলাকার উন্নয়ন ঘটবে। সর্বোপরী যে মানুষটিকে পাশে পাওয়া যায়। যাকে বললেই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে। সরকারের দেওয়া প্রদত্ত গরীবের হক বুঝিয়ে দেয়, এমন লোককেই জনপ্রতিনিধি বানানো উচিত।

গণতন্ত্রের মূল হচ্ছে জনগন। জনগনের ভাল মন্দ দেখা শুনা করা জনপ্রতিনিধির নৈতিকতা। আমরা কেন এটা ভুলে যাই জয়ের পর। আচরণে মিষ্টতা তো দূরে থাক, অনেকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যায়।

জনকল্যানের চেয়ে নিজের কল্যানের কথা বেশী মনে করে। ভোটের নির্বাচনে জনগন ম্যানডেট। জনগনের ও এখানে বিশাল গ্যাঁপ রয়েছে। নির্বাচনের পূর্বের রাতকে অনেকে আবার চাঁদরাত বলে। উপরি বস্তুর বিনিময়ে নিজের মাথা বিক্রি করে অনেকে। ফলশ্রুতিতে আসল মানুষ, সৎ-নির্ভিক মানুষটি আসনে না বসে ভুল মানুষ আসনে বসে যায়।

ভুল মানুষ দিয়ে কখনো জনগনের উন্নয়ন আশা করা যায় না। আমরা শুনেছি ডাক্তারের হাসিমুখ দেখলে নাকি রোগীর রোগ অর্ধেক ভাল হয়ে যায। তদুপরি একজন জনপ্রতিনিধির হাসিমাখা মুখ আর কথা কাজের মিল, মানুষের সমস্যার অর্ধেকটা সমাধান হয়ে যায়।

তাই জন প্রতিনিধি বানানোর আগে একশোবার চিন্তা করে দেখুন, যে মানুষটিকে আপনার এলাকার উন্নয়নের গুরু দায়িত্বভার দিতে যাচ্ছেন- সে মানুষটা আসলে কতটা মানুষ! আপনার আস্থা যেন ধুলিসাৎ না হয়ে যায়।
প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় সেই গ্রাম কিংবা ইউনিয়নটি যেন মডেল ইউনিয়নে রূপ নেয়।
যেখানে গেলে ভোগান্তি কিংবা তথ্য বিভ্রাট নয়, বরঞ্চ সাধারণ মানুষ হাসি মুখে ঘরে ফিরতে পারে।

রাত পোহালেই আমার ইউনিয়ন ফরিদগঞ্জের ৮ নং পাইকপাড়া (দঃ) ইউনিয়নের নির্বাচন। ভোটের খেলায় জিতুক জনপ্রতিনিধি। জয়ের মালা তারই হোক যিনি কি না জনকল্যানে নিবেদিত থাকবেন। জনগন সঠিক মানুষকে বেছে নিক। যে যেই আসনের সত্যিকার দাবিদার সে সেই আসনেই বসুক।

লেখকঃ রিফাত কান্তি সেন গণমাধ্যমকর্মী।