জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ে কর প্রত্যাহার চায় এফবিসিসিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও দেশের বাজারে হু হু করে বেড়েছে জ্বালানির তেলের দাম। জনসাধারণের কথা চিন্তা করে তেলের জন্য কর প্রত্যাহার করে মূল্য পুন:সমন্বয় করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা চেয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)।

গেল রোববার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠানো সংগঠনটির চিঠির সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক করোনা মহামারীর ধকল সামলে পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় রয়েছে দেশের অর্থনীতি। কিন্তু এরই মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম ও জাহাজ/পরিবহন ভাড়া প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এতে উৎপাদন খরচও ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে। ফলে পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি জ্বালানি তেলের (ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন, পেট্রল) দাম গড়ে ৪৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে গণপরিবহন ও কৃষি খাতে বহুল ব্যবহূত ডিজেলের মূল্য ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, জ্বালানি তেলের এ মূল্যবৃদ্ধির হার জাতীয় অর্থনীতিতে আরো চাপ সৃষ্টি করবে। এতে উৎপাদন ও ব্যবসা খরচ আরেক দফা বেড়ে যাবে, পণ্য পরিবহনে বাড়তি খরচ বহন করতে হবে। এ বছর বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি কম হওয়ার ফসল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে কৃষকদের বাড়তি সেচের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এতে কৃষি উৎপাদনের খরচও বাড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হ্রাস পেলে দেশের রফতানি খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এফবিসিসিআইয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, যেখানে ব্যবসাবান্ধব বিভিন্ন নীতিসহায়তার মাধ্যমে সরকার দেশের অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করার আন্তরিক প্রয়াস চালাচ্ছে, সেখানে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি শিল্প-বাণিজ্য, সেবা, কৃষিসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। এতে করে বহুমাত্রিক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে, যা জনজীবনের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছে এফবিসিসিআই।

জ্বালানি তেলের ওপর বর্তমানে মোট ৩৪ শতাংশ করভার (শুল্ক ১০ শতাংশ, মূসক ১৫ শতাংশ ও অগ্রিম কর ৫ শতাংশ এবং অগ্রিম আয়কর ২ শতাংশ) আরোপিত আছে। তবে কর প্রত্যাহার করে জ্বালানি তেলের দাম পুনঃসমন্বয় করলে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব এড়ানো যাবে বলে সংগঠনটি মনে করে।