লঞ্চ অগ্নিকাণ্ড : যেভাবে বাঁচলেন ঢাবি ছাত্র নাজমুল হাসান

ঢাবি ছাত্র নাজমুল হাসান

একদিকে আগুন অন্যদিকে অন্ধকার রাতে কূলহীন নদী। চারদিকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা। বাবা-মায়ের মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠায় জীবন বাঁচানোর তাগিদ। যতক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করা যায় ততক্ষণ অপেক্ষা করেছি।

যখন দেখেছি আর এক মুহূর্ত লঞ্চে থাকা নিরাপদ নয় ঠিক তখনই স্ত্রীর হাত ধরে লঞ্চের ৩ তলা থেকে অন্ধকার নদীতে ঝাঁপ দিয়েছি। ঠাণ্ডা পানিতে কিছুক্ষণ সাঁতরানোর পর একটি ট্রলার আমাদের উদ্ধার করে। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা সামান্য কিছু আঘাত ছাড়া সুস্থ আছি।

এমন লোম হর্ষক ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে আগুনে পুড়ে যাওয়া বরগুণাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ থেকে জীবিত ফিরে আসা যাত্রী নাজমুল হাসান। নাজমুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্টুডেন্ট ওয়েব এর সভাপতি।

ঢাবি ছাত্র নাজমুল হাসান

নাজমুল বলেন, ওই সময়ে লঞ্চে যারা ছিলেন তারা ছাড়া এর বীভৎসতা আর কেও চিন্তাও করতে পারবে না। অগণিত লোক জীবন বাঁচতে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে অনেককে নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখেছি। জানিনা তাদের মধ্যে কতজন তীরে উঠতে পেরেছেন।

নাজমুল হাসান আরও জানান, লঞ্চটিতে প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে আগুল জ্বলেছে। এর মধ্যে লঞ্চটি আনুমানিক দুই-তিনবার অনিয়ন্ত্রিত ভাবে নদীর এপার থেকে ওপার গিয়েছে। সেই সাথে বাতসের কারণে আগুনের তীব্রতাও ছিল ব্যাপক। মুহূর্তেই আগুল ছড়িয়ে পরে ।

লঞ্চ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা শুক্রবার সকালে জানান, ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর দপদপিয়া এলাকায় পৌঁছালে লঞ্চটিতে আগুন লাগে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ইঞ্জিন কক্ষ থেকে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে লঞ্চটি সদর উপজেলার দিয়াকুল এলাকায় গিয়ে নদীর তীরে নোঙর করে।