আজ মঙ্গলবার, ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ দূষণের হাত থেকে এ বিশ্বকে বাঁচানোর অঙ্গীকার নিয়ে প্রতিবছর ৫ জুন দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য- ‘আসুন প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি’; স্লোগান— ‘প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার করি, না পারলে বর্জন করি’।
১৯৭২ সালে জাতিসংঘের মানবিক পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) উদ্যোগে প্রতিবছর বিশ্বের শতাধিক দেশে এ দিবসটি পালন করা হয়।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দর আগামীর জন্য পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাণীতে পলিথিন ও প্লাস্টিক দ্রব্যকে পরিবেশ দূষণের অন্যতম নিয়ামক উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সাশ্রয়ী ও দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ার কারণে সব ক্ষেত্রেই প্লাস্টিক দ্রব্যের ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু পলিথিন বা প্লাস্টিক বর্জ্য মাটি, জলাশয়, নদ-নদী ও সমুদ্রকে দূষিত করছে, বাড়ছে মানবস্বাস্থ্যের ঝুঁকি। এ পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের পরিবেশ দিবসের স্লোগানকে অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে অভিহিত করেন রাষ্ট্রপতি।
আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়ে চলেছে। তাই এখন প্লাস্টিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। এরই মধ্যে সরকার জাতীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ‘থ্রি আর’ (রিডিউস, রিইউজ ও রিসাইকেল) কৌশল নিয়েছে। পাটের উৎপাদনের বহুমুখী ব্যবহার বাড়ানোর জন্য ধান, চালসহ কয়েকটি পণ্য প্যাকেজিংয়ে পাটজাত সামগ্রী ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জৈব পচনশীল পাটজাত পণ্যের বহুমুখী ব্যবহার পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলেও বলেও আশাবাদ জানান তিনি।
পরিবেশ দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের কারণে প্রকৃতি ও পরিবেশে প্রতিনিয়ত দূষিত বর্জ্য যুক্ত হচ্ছে। বিঘ্নিত হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।
প্লাস্টিকের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন যে বর্জ্য তৈরি হয়, তার শতকরা প্রায় ১০ ভাগ প্লাস্টিক। আর প্রতিবছর প্রায় আট মিলিয়ন টন প্লাস্টিক সমুদ্রে পড়ে। এর ফলে এক মিলিয়ন সমুদ্রচারী পাখি ও এক লাখ সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীর মৃত্যু হয়। প্লাস্টিকের কারণে উর্বর কৃষি জমি থেকে শুরু করে খাল-বিল, নদ-নদী ও সাগর-মহাসাগরের প্রতিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে বলে প্লাস্টিকের পুনঃব্যবহার ও পুনঃচক্রায়ন একান্ত প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে চলেছে। পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, পরিবহন, মজুত ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পলিথিনের বিকল্প পাটের শপিং ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাত করতেও বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পণ্যে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপনের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রতিবেশের টেকসই ব্যবস্থাপনায় জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা বাড়বে বলে আশাবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।