৯০ দিনে বিচ্ছিন্ন হতে পারে কাবুল

মার্কিন গোয়েন্দার সংস্থার এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে কাবুলের দখল নিতে যাচ্ছে তালেবানরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। আর মাত্র ৯০ দিনের মধ্যে তালেবানের হাতে কাবুলের পতন ঘটতে পারে।

আফগানিস্তানে তালেবানের জোর অগ্রযাত্রা অব্যাহত আছে। তারা গতকাল বুধবার দেশটির আরও একটি প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিয়েছে। সব মিলে মাত্র ছয় দিনে নয়টি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করেছে তালেবান বাহিনী। এমন প্রেক্ষাপটে রাজধানী কাবুল পতনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দাদের মূল্যায়নের তথ্য সামনে এল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের ওই কর্মকর্তা গতকাল রয়টার্সকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী আফগানিস্তান ত্যাগ করছে। তালেবান দ্রুত বিভিন্ন এলাকা দখল করছে। এ প্রেক্ষাপটে তালেবানের হাতে কাবুলের পতন হতে কতটা সময় লাগতে পারে, তা মূল্যায়ন করেছেন মার্কিন গোয়েন্দারা।

ইতিমধ্যে তালেবানরা যে নয়টি প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নিয়েছে সেগুলো হলো: ফাইজাবাদ, ফারাহ, পুল-ই-খুমরি, জারাঞ্জ, কুন্দুজ, তাকহার, সার-ই-পল, তালুকান ও সেবারঘান। মার্কিন গোয়েন্দাদের মূল্যায়নে কাবুল পতনের সম্ভাব্য যে সময়ের কথা বলা হয়েছে, তা একদম চূড়ান্ত নয় বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, তবে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী আরও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে চলমান যুদ্ধের গতি পরিবর্তন করে দিতে পারে। রাজধানী কাবুলের পতন নিয়ে ইতিমধ্যে দেশ-বিদেশে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

বাইরের দেশের পাঁচজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, বিদেশি দেশগুলো কাবুল থেকে তাদের কর্মীদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গত মঙ্গলবার জানান, আফগানিস্তানের মোট ভূখণ্ডের ৬৫ শতাংশ এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। আর দেশটির ১১টি প্রাদেশিক রাজধানী পতনের হুমকিতে রয়েছে। এরই মধ্যে পালিয়েছে দেশটির অর্থমন্ত্রীও। কাল ফাইজাবাদের পতনের পর প্রচণ্ড চাপে পড়েছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের বড় শহর মাজার-ই-শরিফ। তালেবান যোদ্ধারা শহরটির কাছাকাছি চলে এসেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি গতকাল মাজার-ই-শরিফ সফর করেন। শহরটি রক্ষায় তিনি সেখানকার তালেবানবিরোধী যোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেন।

দক্ষিণাঞ্চলের কান্দাহার শহরে তালেবানের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে। শহরে মুহুর্মুহু রকেট হামলা হচ্ছে। সেখানকার এক চিকিৎসক বলেন, লড়াইয়ে আফগান বাহিনীর অনেক সদস্য নিহত হয়েছেন। একের পর এক তাঁদের লাশ আসছে। তালেবানের আহত যোদ্ধারাও চিকিৎসা চাইছেন।