ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাগরিক সেবা বন্ধ, ‘বেলচা পর্যন্ত লুট হয়েছে’

নাগরিক সেবা বন্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৬ দিন ধরে ময়লা-আবর্জনা অপসারণ হচ্ছে না। পৌরসভার সকল নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে জনজীবন অতিষ্ঠ, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। গেল রোববার হেফাজতের হরতাল চলাকালে হামলা হয় পৌরসভায়। ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের পর চালানো হয় লুটপাট। এতে পৌরসভার সবকিছু নিঃস্বে:ষ হয়ে যায়।

পৌরসভার সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মচারীরা জানিয়েছেন, ময়লা যে সরাবেন সেই বেলচা পর্যন্ত লুট হয়েছে। ঝাড়ু, টুকরি, শাবল, ব্লিচিং পাউডারের ড্রাম কোনও কিছুই নেই। গার্বেজ ট্রাক-ট্রলি ভাংচুর করা হয়েছে। ২০০ পোর্টেবল হ্যান্ড ট্রলি এবং ২০টি রিকসা ভ্যান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৩০০ পোর্টেবল মোবাইল ডাস্টবিন পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, ফলে ময়লা-আবর্জনা অপসারণের কাজ বন্ধ রয়েছে। সবমিলিয়ে পৌরসভার ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক। কোনও কার্যক্রম চালানোর মতো ব্যবস্থাই নেই।

পৌর কর্মকর্তারা জানান, স্বাধীনতা দিবসে প্রথম হামলা হয় পৌরসভার বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে। সেখানে থাকা বঙ্গবন্ধুর ৩টি ম্যুরাল ভাংচুর করা ছাড়াও স্কয়ারের ফোয়ারাতে থাকা ৯টি সাবমার্সিবল পাম্প আগুনে পোড়ানো হয়। এরপর ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে হামলা হয় পৌরভবনে। ভাংচুর-লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় সেখানে। এতে ৪ তলা বিশিষ্ট পুরো পৌরভবনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পৌরভবনের আসবাবপত্র বলতে কোনও কিছু নেই। আগুনে ছাই হয়ে গেছে সব রেকর্ডপত্র।

পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির বলেন, “হেফাজতের স্থানীয় কিছু নেতাকর্মী, বিএনপি-জামায়াত এবং সদ্য অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে আমার দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে হামলা হয়। গান পাউডার ও পেট্রোল ঢেলে পৌরভবনের সবকিছু জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে আমাদের শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া আমার বাসভবনেও হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। ফলে পৌরসভার পক্ষ কোনও রকম নাগরিক সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।”

আরো পড়ুন- শনিবার রাজধানীর সড়কে চালু হচ্ছে ১০টি ইউটার্ন

এছাড়া ৪৫টির মতো আলমারী, ১৮টি ডেস্কটপ কম্পিউটার, ৫টি ল্যাপটপ, ৪টি ফটোকপিয়ার মেশিন, এসি ৫টি, স্বাস্থ্য শাখার ১২টি ডিপ ফ্রিজসহ ভাণ্ডারে রক্ষিত যানবাহনের খুচরা যন্ত্রাংশ, সংরক্ষণ শাখার জামানতের নথিসহ আরও বিভিন্ন মূল্যবান মালামাল আগুনে পুড়ে গেছে ও ধ্বংস হয়েছে বলে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণে তারা এসব উল্লেখ্য করেন। পৌরসভার সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খা পৌর মিলনায়তন আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। ১৫০ বছরের পুরনো এই পৌরসভা এখন নাম সর্বস্ব।