ঢাকার সাবেক মার্কিন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মুজাহিদ আজমি তানহা এবং সেক্রেটারি নাইমুল হাসান রাসেলসহ নয় জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে।
শুক্রবার (৫ মার্চ) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রউফ বলেন, ‘তদন্তে যাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।’
অভিযুক্ত বাকিরা হলেন– মীর আমজাদ হোসেন, শহিদুল আলম খান, সাজু ইসলাম, রাজীবুল ইসলাম, ফিরোজ মাহমুদ, সিয়াম ও অলি আহমেদ। আমজাদ মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক। বাকিরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৮ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনাল টিমের পরিদর্শক আব্দুর রউফ আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ২০ জানুয়ারি আদালত অভিযোগপত্র আমলে নেন।
শুক্রবার (৫ মার্চ) বিষয়টি জানাজানি হয়েছে। অভিযোগপত্রে হামলার কারণ হিসেবে সাবেক এই রাষ্ট্রদূত সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন এমন সন্দেহে আসামিরা হামলা করেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গেলো ২০১৮ সালের ৪ আগস্ট রাতে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মোহাম্মদপুরের বাসায় নৈশভোজে অংশ নিয়ে ফেরার পথে তখনকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে একদল মোটরসাইকেল আরোহী হামলা করে। হামলাকারীরা রাষ্ট্রদূতের দুই নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর ও দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এছাড়া বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বাড়ির জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশের পরে মামলাটির তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়।
এই মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অভিযোগপত্রে যাদের নাম রয়েছে তাদের সবাইকে পলাতক আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিরা এখনও কেউ গ্রেফতার হননি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারি প্রকাশ্যেই তাদের নিত্যদিনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন। যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি নাইমুল হাসান রাসেল তার মা অসুস্থ এবং তিনি হাসপাতালে আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ-উত্তরের সভাপতি ইব্রাহীম জানান, যদি কারও বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় এবং আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন, তবে তার বা তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ-উত্তরের সেক্রেটারি সাইদুর রহমান হৃদয় বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি আজই আমি প্রথম জানলাম। আমি বিষয়টির খোঁজ নেবো।’