সারাদেশে করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু

টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বহুল প্রতীক্ষিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি সারাদেশে শুরু হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় ৫০টি হাসপাতাল ও সারাদেশে ৯৫৫টি হাসপাতালে দেয়া হচ্ছে এই টিকা।দেশের জেলা হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।

রাজধানী ঢাকাতে ৫০টি হাসপাতালে ২০৪টি টিম , সারাদেশে ৯৫৫টি হাসপাতালে দুই হাজার ১৯৬টি টিম কাজ করার কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মোট এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে ২ হাজার ৪০০টিম কাজ করবে। এছাড়াও ভ্যাকসিন বিষয়ক কার্যক্রমের জন্য টিম প্রস্তুত রয়েছে সাত হাজার ৩৪৪টি।

শনিবার পর্যন্ত করোনা টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন তিন লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে। গত নভেম্বরে এই টিকার তিন কোটি ডোজ পেতে সেরামের সঙ্গে চুক্তি হয় বেক্সিমকোর। যার মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে গত ২৫ জানুয়ারি।  ২০ জানুয়ারি দেশে আসে ভারত সরকারের উপহার দেওয়া ২০ লাখ কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন।

কেন দ্বিতীয় ডোজ ৪ সপ্তাহ পর

প্রাথমিকভাবে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়ার আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে সে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে। চার থেকে ১২ সপ্তাহ পরে এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে বলে প্রথমে নির্দেশনা ছিল। কিন্তু আমাদের অবস্থা অনুযায়ী প্রতিনিয়ত পরিকল্পনাকে সাজাতে হচ্ছে। আপাতত ঠিক করা হয়েছে, দ্বিতীয় ডোজ চার সপ্তাহ পরে দেওয়া হবে—বলেন অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

চার থেকে ১২ সপ্তাহ পর এই টিকা দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও  চার সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানান খুরশীদ আলম।

কারা ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না

অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ১৮ বছরের কম বয়সীদের টিকা দেওয়া হবে না। একইসঙ্গে গর্ভবতী নারী, বুকের দুধ পান করাচ্ছেন এমন মায়েদের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকার কারণে তাদেরকে আপাতত এই টিকা দেওয়া হচ্ছে না। কারও জ্বর থাকলে তাদের টিকা দেওয়া যাবে না বলে জানান তিনি।

আবার মধ্যম থেকে যদি গুরুতর মাত্রায় কোভিড আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাদের চার সপ্তাহের মধ্যে টিকা দেওয়া যাবে না। তবে যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন এবং তার সময়কাল যদি একমাস হয়ে থাকে তাহলে তারা টিকা নিতে পারবেন। আমরা অতিরিক্ত সতর্ক থাকার জন্য যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি, তারা যেন চার সপ্তাহের মধ্যে টিকা না নেন সেজন্য অনুরোধ করবো—বলেন তিনি।

ফ্লোরা বলেন,  অন্য কোনও অসুখের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের এই টিকা দেওয়া যাবে না বলে কোনও নিষেধ নেই। কিন্তু সতর্কতার অংশ হিসেবে যারা গুরুতর অসুস্থ বা হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাদেরকে বলা হচ্ছে এখনই যেন টিকা দিতে না আসেন। এছাড়াও টিকাদান বুথে একটি প্রশ্নোত্তর থাকবে, টিকাদান কর্মী সেসব প্রশ্ন জেনে-উত্তর পেয়ে তাকে টিকা দেওয়ার জন্য নির্বাচন করবেন।

তিনি বলেন, যাদের কোনও ওষুধে অ্যালার্জি আছে তাদের ক্ষেত্রে আমরা একটু সাবধান থাকতে চাই। যদিও কোনও ওষুধে অ্যালার্জি থাকলেই যে টিকাতেও অ্যালার্জি থাকবে তা নয়। কিন্তু তারপরও এই টিকা যেহেতু নতুন তাই যাদের ওষুধে অ্যালার্জি রয়েছে তাদেরকে এই মুহূর্তে টিকা দেবো না।