কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণের ঘটনায় পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাতকে সতর্ক করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘দেশকে পুলিশি রাষ্ট্র বানাবেন না।’
সোমবার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। এর আগে বিচারিক হাকিমের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় এই এসপিকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছিল।
আবেদনে তানভীর আরাফাত বলেছেন, সেদিন তিনি ম্যাজিস্ট্রেটকে চিনতে পারেননি। তাই এমন অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক হবেন। এ ধরনের ভুল আর কখনো হবে না।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ পুলিশ সুপারকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ রেখেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা এস এম তানভীর আরাফাতের পক্ষে আদালতে ছিলেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী ও আহমেদ ইশতিয়াক।
একইসঙ্গে ভেড়ামারা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলী ও ওই ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ করা সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কাউকে হয়রানি না করারও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
কুষ্টিয়ার এসপি এস এম তানভীর আরাফাতকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘পত্র-পত্রিকায় যা দেখলাম তা যদি কুষ্টিয়ার বাস্তব চরিত্র হয়, তবে তা হবে জাতির জন্য ভয়ঙ্কর। এমন যাতে মানুষের মনে না হয় যে দেশ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। দেশকে পুলিশি রাষ্ট্র বানাবেন না। জাতি উৎকণ্ঠিত, এটা নিরসনের দায়িত্ব আপনাদের।’
হাইকোর্ট আরও বলেন, ‘পুলিশকে কথায় নয়, কাজে পটু হতে হবে। কে কোন মতাদর্শের, কোন দলের, সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। সর্বস্তরের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পুলিশের দায়িত্ব। পুলিশ কারও জন্য ভীতিকর না হয়ে তাদের কর্মকাণ্ডে মানুষের বন্ধু হতে হবে।’
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসীন হাসানের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগের বিষয়ে ব্যখ্যা দিতে গত ২০ জানুয়ারি পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে তলব করে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন- চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতিসহ আটক ১
সেই সাথে এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে। এ সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর নজরে আসার পর হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এই আদেশ দিয়েছিলেন।