‘ব্র্যান্ডিং হিরোস’ অ্যাওয়ার্ড পেলো ৪৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের ‘ব্র্যান্ডিং হিরোস’ অ্যাওয়ার্ড পেলো ৪৭ ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। ক্রিয়েটিভ আইডিয়ার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে ওয়ালটন এবং মার্সেল ব্র্যান্ডের ডিজিটাল ক্যাম্পেইনে ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে বিক্রয় বৃদ্ধিতে বিশেষ অবদান রাখায় এই পুরস্কার দেয়া হয়।

ব্র্যান্ডিং হিরোজদের পুরস্কারের ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং মুকুট তুলে দেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ। সে সময় তিনি বর্তমান বৈশ্বিক সংকটময় পরিস্থিতিতে ব্যবসা পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা দেন।

বুধবার বিকেলে (৩ আগস্ট, ২০২২) রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসের অডিটোরিয়ামে ‘ব্র্যান্ডিং হিরোজ’ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার, এমদাদুল হক সরকার, ইভা রিজওয়ানা নিলু ও হুমায়ূন কবীর, ওয়ালটন প্লাজা ট্রেডস-এর সিইও মোহাম্মদ রায়হান, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম জাহিদ হাসান, ফিরোজ আলম, তানভীর রহমান, আরিফুল আম্বিয়া, ড. সাখাওয়াৎ হোসেন ও আমিন খান, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শহিদুজ্জামান রানা প্রমুখ।

জানা গেছে, ব্র্যান্ডিং হিরোজ পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছে ২১ পরিবেশক প্রতিষ্ঠান এবং ওয়ালটন প্লাজা। এসব প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায়ে ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের ব্র্যান্ডিং এক্টিভেশন এবং এর মাধ্যমে ওয়ালটন পণ্যের বিক্রয় বৃদ্ধিতে অসামান্য অবদান রেখেছে।

পাশাপাশি, দেশব্যাপী অভিনব ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম, সেলস, সেলস গ্রোথ, কালেকশন, কালেকশন গ্রোথ এবং রিসিভঅ্যাবল গ্রোথ এসব মূল্যায়ণ মানের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানটির ২৬ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হয়।

অনুষ্ঠানে ব্র্যান্ডিং হিরোজ অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের ‘এক্সটাঅর্ডিনারি সোলজার্স’ হিসেবে অভিহিত করেন ওয়ালটন হাই-টেকের এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদ। তিনি বলেন, আপনারা সবাই এক একজন সৈনিক। দলবদ্ধ হয়ে কাজ করার ফলেই বৃহৎ সাফল্য আসে। ইউনিক কিছু অর্জন করতে গেলে প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকতে হয়। কাক্সিক্ষত সাফল্যে পৌঁছাতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।

সেজন্য পরিবর্তন যদি আনতে হয়, সমষ্টিগত ভাবে আনতে হবে। আমাদের নিজের মধ্যে পরিবর্তন আসতে হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম মুর্শেদ বলেন, বর্তমানে বৈশি^ক ব্যবসায়িক মন্দা যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে গিয়েছে। এর বিপরীতে বদ্ধস্ফীতি দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম এবং পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ডলারের বিনিময় মূল্য বেড়ে গেছে।

সব মিলিয়ে পণ্যের উৎপাদন খরচ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও বৈশি^ক এ সংকটময় পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের কথা বিবেচনায় উৎপাদন খরচ অনুযায়ী ওয়ালটন পণ্যের মূল্য বাড়ানো হয়নি। প্রফিট সেক্রিফাইস করে আমরা ক্রেতাদের পণ্য দিচ্ছি। কারণ আমরা চাই ওয়ালটনের প্রতিটি সদস্য, দেশের প্রতিটি মানুষ ভালো থাকুক। দ্রুত এ পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটুক।

বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট উত্তরণে সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান ওয়ালটন সিইও। তিনি বলেন, কর্মস্থলের পাশাপাশি বাসস্থানে সব বিষয়ে সাশ্রয়ী হোন। এরকম সংকটময় পরিস্থিতিতে আমাদের একটু সচেতনতা ও ত্যাগস্বীকার অন্যের জন্য অনেক বড় উপকারে আসতে পারে।

গোলাম মুর্শেদ আরো বলেন, ওয়ালটন গ্রাহকের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী প্রতিনিয়ত প্রোডাক্ট ডেভেলপ করে। এজন্য বাংলাদেশে ওয়ালটনের রয়েছে সর্ববৃহৎ রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (আরঅ্যান্ডআই) সেন্টার। এর পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ায় আমাদের ইনোভেশন সেন্টার চালু হয়েছে। বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনারিজ সম্বলিত নিজস্ব প্রোডাকশন প্ল্যান্টে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদনের সক্ষমতা আমাদের আছে।

ফ্রিজ, টিভি, এসি থেকে শুরু করে সব পণ্যের নতুন নতুন মডেল আসছে। আশা করছি খুব শিগগিরই আমরা সব ধরনের সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো। ‘ব্র্যান্ডিং হিরোস’ পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে হবিগঞ্জের টি আর ইলেকট্রো মার্টের স্বত্ত¡াধিকারী মোদারিছ আলী টেনু বক্তব্য রাখেন। তিনি ওয়ালটনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সুসম্পর্কের জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ওয়ালটন সিইও’র দেয়া গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা ব্যবসাখাতে তাদের অনুপ্রাণিত করবে, উৎসাহ যোগাবে।