জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

সপ্তাহব্যাপী ষষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহশুমারি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে নিজে গণনাকারীর কাছে তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে পরিবার (হাউজহোল্ড) ভিত্তিক কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন।

তবে ১৪ তারিখ রাত ১২টা ১ মিনিট থেকেই ভাসমান লোক গণণার মধ্যদিয়ে শুরু হয় শুমারির কার্যক্রম। জনশুমারি ত্রুটিমুক্ত ও সফল করতে দেশে এবারই প্রথম জনশুমারি ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য সংগ্রহের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন। এদিন বিকালে বঙ্গভবনে গণনাকারীদের কাছে তথ্য দেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।

সর্বশেষ ২০১১ সালে আদমশুমারি হয়। এর ১১ বছরের বেশি সময় পর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ডিজিটাল পদ্ধতিতে সপ্তাহব্যাপী আদমশুমারি পরিচালনা করছে। মাঠপর্যায়ে ১৫-২১ জুনের মধ্যে তথ্য সংগ্রহ করা হবে, যা ‘শুমারি সপ্তাহ’ হিসাবে বিবেচিত।

জনশুমারি উপলক্ষ্যে সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবন থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়। এতে নেতৃত্ব দেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এ সময় পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। র‌্যালিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্কাউটস, গালর্স গাইডসহ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

আগারগাঁওয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পরিসংখ্যান ভবনে এসে র‌্যালিটি শেষ হয়। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শামসুল আলম বলেন, ‘এটি জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য আদমশুমারির তথ্য ও পরিসংখ্যান খুবই জরুরি।’ আদমশুমারির প্রশ্নপত্রে প্রায় ৩৫টি প্রশ্ন আছে। যেখানে গণনাকারী ট্যাব ব্যবহার করে মানুষের কাছ থেকে প্রশ্নের উত্তর নিচ্ছেন।

দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে তথ্য দিতে হবে। ইতোমধ্যেই জনগণকে আদমশুমারির আওতায় আনার জন্য গণসচেতনতা সৃষ্টির সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং প্রত্যেকে যাতে গণনা প্রক্রিয়ার আওতায় আসেন এবং কেউ যাতে বাদ না পড়েন সেদিকেও জোর দেওয়া হয়েছে।

তথ্য সূত্র মতে, জনসংখ্যা ও গৃহশুমারিতে গৃহহীন ও অসহায় মানুষের তথ্য সংগ্রহের জন্য ইতোমধ্যে শহর ও গ্রাম উভয় ক্ষেত্রেই প্রায় ২ হাজার নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। যখন ডাটা এনক্রিপ্টেড আকারে থাকবে তখন বিবিএস ছাড়া আর কারোই জনশুমারির সার্ভারে প্রবেশাধিকার থাকবে না।

এছাড়াও হ্যাকিংয়ের সম্ভাব্য কোনো প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে ডাটার জন্য ব্যাকআপ থাকবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গণনাকারীরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন এবং অনুরোধ থাকলে গণনাকারীরা রাতেও মানুষের বাড়িতে যাবেন। এছাড়া অনাবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকেও মৌলিক তথ্য আদমশুমারিতে সংগ্রহ করা হবে।

জনশুমারি সফল করতে প্রায় ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯৭ জন গণনাকারী, ৬৩ হাজার ৫৪৮ জন সুপারভাইজার, ৩ হাজার ৭৭৯ জন আইটি সুপারভাইজার, ৩ হাজার ৭৭৯ জন জোনাল অফিসার, ১৬৩ জন জেলা আদমশুমারি সমন্বয়কারী এবং প্রায় ১২ জন বিভাগীয় আদমশুমারি সমন্বয়কারী বিভিন্ন স্তরে শুমারি কার্যক্রমে সক্রিয় রয়েছেন।

এছাড়া বিবিএস সদর দপ্তরে ইতোমধ্যেই একটি অত্যাধুনিক কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, যেখান থেকে যে কেউ ০৯৬০২৯৯৮৮৭৭ নন্বরে ফোন করে শুমারিসংক্রান্ত যে কোনো তথ্য পেতে পারবেন।

তথ্য সূত্র মতে, দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চাঁদপুরেও শুরু হয়েছে জনশুমারি ও গৃহগণনার কাজ। বুধবার সকাল ৮টায় চাঁদপুরের নিজস্ব বাসভবন থেকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি। চাঁদপুরে ৫২ জন জোনাল ও ৫২ জন আইটি অফিসার শুমারিতে কাজ করছেন। সঙ্গে আছেন ৭ হাজার সুপারভাইজার ও গণনাকারী।