বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরির প্রযুক্তি আনছে এসিআই

বর্জ্য থেকে জৈব সার

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ময়লা-আবর্জনা পরিণত হবে জৈব সারে। পচনশীল বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরির প্রযুক্তি দেশে আনতে কাজ করছে এসিআই ফার্টিলাইজার। এই প্রযুক্তিতে বাণিজ্যিকভাবে জৈব সার উৎপাদন করে বাজারজাত করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। ইকোডাইজেস্টার (Ecodigester) নামের এই যন্ত্র বা প্রযুক্তিটি দেশে আনতে আলোচনা চলছে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে।

সোমবার (২৫ এপ্রিল ২০২২) রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাথে এসিআই ফার্টিলাইজার এবং ডাচ প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রযুক্তিটি দেশে আনার পর পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু করতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

এসিআই ফার্টিলাইজারের বিজনেস ডিরেক্টর বশির আহমেদ দেশসমাচারকে বলেন, এই ইকোডাইজেস্টার দিয়ে পচনশীল সব ধরনের ময়লা প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব। যন্ত্রেটির মাধ্যমে ময়লা প্রক্রিয়াজাত করে জৈবসার তৈরিতে সময় লাগে মাত্র ২৪ ঘণ্টা। ময়লাগুলোকে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করার পরই তা জৈবসারে রূপান্তরিত হবে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেডের এই একটি যন্ত্র দিয়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ টন জৈব সার তৈরি করা সম্ভব। দেশে এই প্রযুক্তি চালু করা সম্ভব হলে ব্যর্জ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আসবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাথে এসিআই ফার্টিলাইজার এবং ডাচ প্রতিনিধিদল

এসিআই ফার্টিলাইজারের প্রোডাক্ট ম্যানেজার শাহ মোহাম্মদ আরেফিন জানান, আমরা পাইলটিং নিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাথে বৈঠক করেছি, তারাও আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এই যন্ত্রটি বসাতে পারলে ময়লা ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে জানান তিনি। বলেন, এই প্রযুক্তিতে প্লাস্টিক জৈব সারে পরিণত হবে না। এক ধরনের স্ক্যানার দিয়ে প্লাস্টিক আলাদা করে ওই ময়লা ইকোডাইজেস্টারে প্রবেশ করাতে হবে। প্রকল্পটি সফল হলে ধরাবাহিকভাবে আমরা অন্যান্য সিটি করপোরেশনগুলোর সঙ্গেও কাজ করতে চাই।

এসিআই এগ্রিবিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী বলেন, বর্জ ব্যবস্থাপনায় কাজ করে সিটি করপোরেশন। এ কারণে এই প্রক্রিয়ায় সিটি করপোরেশনকে যুক্ত করতে পারলে সেটি কার্যকর হবে। দেশে এখন যার যেখানে সুবিধা, ময়লা ফেলে। ইকো ডাইজেস্টারে ময়লা ফেললে তা জৈব সারে পরিণত হবে। সেখান থেকেই কৃষকের কাছে সার সরবরাহ করা যাবে। ময়লা যখন অ্যাসেটে (মূল্য/সম্পদ) পরিণত হবে, তখন মানুষ যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, এই প্রযুক্তি দেশের বর্জ্য ব্যবস্থায় দারুণ পরিবর্তন ঘটাবে। পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি মাটির উর্বরতা বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই প্রযুক্তি। সরকার উদ্যোগী হলে শহরও পরিস্কার থাকবে এবং ময়লাও সম্পদে পরিনত হবে।