ভালোবাসার মায়াজাল

ছবি: শাহজালাল রশীদ চৌধুরী ও তার স্ত্রী শাইরিন চৌধুরী

ভালোবাসা মানে অজানাকে জানা নয় বরং নিত্যদিনই প্রিয়জনকে নতুন করে আবিষ্কার করা। তাকে কতটা ভালোবাসি, সেটি আর নতুন করে বলার কিছুই নেই। কারণ ভালোবাসার স্নেহডোরে তাকে স্থান দিয়েছি সবার উপরে। তাই বলতে হয়, তুমি শুধু আমার পৃথিবী যেখানে বিচরণ তোমার আর আমার। ভালোবাসা বেঁচে থাকুক, সিক্ততার মায়াজালে আলো ছড়িয়ে পড়ুক সবার মনে।

ভালোবাসা নিয়ে বিশ্বকাবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন, “অমন আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে চলবে না। এবার হৃদয় মাঝে লুকিয়ে বোসো কেউ জানবেনা, কেউই বলবে না”

ভালোলাগা আর ভালোবাসা একই বিষয় যা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তিরই অংশ। আর এই ভালোবাসার জন্য জীবনও দিতে হয়েছে অনেককে, জীবন দিতে হয়েছে তাদের মহিমান্বিত করতে। প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট দিনে পালন করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ বা ভালোবাসা দিবস। প্রতিবছরের ফেব্রূয়ারি মাসের ১৪ তারিখে পালন করা হয় দিবসটি। তবে, এই দিবসের পেছনের ইতিহাস সবার মনেই দাগ কাটবে। ভালোবাসা দিবস আজ বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিতি পেয়েছে রোমের ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের মাধ্যমে।

ছবিতে শাহজালাল রশীদ চৌধুরীর সাথে স্ত্রী শাইরিন চৌধুরী

একদিকে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন মানবপ্রেমিক অন্যদিকে রোমের শাসক ছিলেন বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী। রোম সম্রাট ক্লডিয়াস ভ্যালেন্টাইনকে দেব-দেবীর পূজা করতে বলায় তিনি অস্বীকৃতি জানালে তাকে কারাবন্দী করা হয়। তাই রাষ্ট্রীয় আদেশ ভঙ্গ করায় রোম সম্রাট তাকে ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। তখন থেকেই ভালোবাসা দিবস পালন করা শুরু হয়।

সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কারারুদ্ধ হওয়ার পর অনেক যুবক-যুবতীদের অনেকেই প্রতিদিন তাকে কারাগারে দেখতে আসত এবং ফুল উপহার দিত। তারা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক কথা বলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদ্দীপ্ত রাখত। এক কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েও ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত।

বেশ অনেক সময় ধরে তারা দুজন প্রাণ খুলে কথা বলত। একটা সময় দেখা গেল ভ্যালেন্টাইন তার প্রেমে পড়ে যায়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আধ্যাত্মিক চিকিৎসায় অন্ধ মেয়েটি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসা ও তার প্রতি দেশের যুবক-যুবতীদের ভালোবাসার কথা সম্রাটের কানে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

আমাদের দেশে দিনটিকে বরণ করে নেয়া হয় সূচনা সঙ্গীত, ভালোবাসার স্মৃতিচারণ, কবিতা আবৃত্তি, গান, ভালোবাসার চিঠি পাঠ এবং ভালোবাসার দাবিনামা উপস্থাপনার মাধ্যমে। এদিবসকে ঘিরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে কনসার্টেরও আয়োজন করা হয়।

লেখা : মাজহারুল আলম