শীর্ষ ব্রোকারের স্বীকৃতি লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের

লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ

দেশের শেয়ারবাজারে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্রোকারেজ ব্যবসা পরিচালনা করছে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেড। এ পথচলায় গ্রাহকসেবা ও লেনদেন অংশীদারিত্বের দিক দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান ছিল শীর্ষে। এর মধ্যে ১৬ বছর দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ।

সমাপ্ত বছর ২০২১ সালেও শেয়ারবাজারে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ব্রোকারের স্বীকৃতি পেয়েছে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ। এ সময় শীর্ষ দশে থাকা অন্যান্য ব্রোকারের মধ্যে রয়েছে আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ, আইডিএলসি সিকিউরিটিজ, সিটি ব্রোকারেজ, ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ, ইউনাইটেড ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেডিং কোম্পানি, শেলটেক ব্রোকারেজ, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ ও এমটিবি সিকিউরিটিজ লিমিটেড।

ব্যবসায়িক পারফরম্যান্সের বিষয়ে লংকাবাংলা ক্যাপিটাল মার্কেট অপারেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, লংকাবাংলা ও এর পরিষেবার ওপর গ্রাহকদের অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস আমাদের এ অর্জনকে সাফল্যমণ্ডিত করেছে। এজন্য গ্রাহকরাই সার্বিক প্রশংসার দাবিদার।

তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সমর্থন ছাড়া আমাদের পক্ষে ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘ সময় ধরে শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব হতো না। গেলো দুই দশকে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ শেয়ারবাজারের উন্নয়ন ও প্রসারে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। সেই সঙ্গে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করার জন্যও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে বলে জানান তিনি।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকা উল্লেখ করে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও খন্দকার সাফাত রেজা বলেন, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর গ্রাহক পরিষেবা নিশ্চিত করতে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করেছি, যাতে গ্রাহকেরা স্বাচ্ছন্দ্যে যেকোনো সেবা যেকোনো সময় নিজে নিজেই পেতে পারেন।

স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনলাইনে বেনিফিশারি ওনার্স (বিও) হিসাব খোলা, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে একই সঙ্গে অনলাইনে লেনদেন সম্পন্ন করা, শেয়ারবাজারের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্তসহ দেশ ও বিদেশের গ্রাহকদের সুবিধার্থে বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানের জন্য লংকাবাংলা তার নিজস্ব উদ্যোগে ট্রেডএক্সপ্রেস, আই ব্রোকার ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্সিয়াল পোর্টাল নামে ডিজিটাল প্লাটফর্মগুলো তৈরি করেছে। লংকাবাংলার এ ধরনের সক্রিয় পদক্ষেপ ও উদ্ভাবনী কৌশলগুলো শেয়ারবাজার বিনিয়োগকে আগের তুলনায় আরো সহজলভ্য করবে।

শেয়ারবাজার ব্রোকারেজদের পারফরম্যান্সের বিষয়ে ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মো. সাইফুর রহমান মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, যারা পেশাদারিত্বের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিষ্ঠানকে চালাতে পেরেছে তারাই ব্রোকিং ব্যবসায় ভালো করেছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রতি গ্রাহকেরও বেশি আস্থা থাকে।

ব্রোকিং ব্যবসা চালাতে গেলেও যে একটি ভালো অংকের বিনিয়োগ প্রয়োজন হয় বিষয়টি আমাদের এখানে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বেশিদিন হয়নি। আইনে একজন ব্রোকারের কী ধরনের অবকাঠামো, লজিস্টিকস, তথ্যপ্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও আর্থিক সক্ষমতা থাকতে হবে সে বিষয়ে বলা আছে।

যারাই এগুলো পরিপালন করতে পেরেছে আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ব্রোকার হিসেবে তারাই দীর্ঘমেয়াদে ভালো করেছে। অনেক দেশেই ব্যাংকের তুলনায় বড় ব্রোকিং প্রতিষ্ঠান দেখা যায়। আমাদের দেশেও ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে বলে আশা করছি।

সক্ষমতার দিক দিয়ে অন্যদের তুলনায় নিজেদের এগিয়ে রাখতে পারার কারণেই দীর্ঘমেয়াদে দেশের শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক ব্রোকাররা ভালো করছেন বলে মনে করছেন সিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা যায় প্রাতিষ্ঠানিক ব্রোকাররাই সবচেয়ে বেশি ভালো করছে। এর কারণ হলো তাদের সক্ষমতা অন্যদের চেয়ে বেশি। ফলে তারা গ্রাহকদের ভালো সেবা দিতে পারছে। এপিআই নেয়ার ক্ষেত্রেও প্রাতিষ্ঠানিক ব্রোকাররাই এগিয়ে রয়েছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে যারা নিত্যনতুন ফিনটেকের মাধ্যমে গ্রাহকদের ভালো সেবা দিতে পারবে তারাই ব্যবসায়িকভাবে ভালো করবে বলে আমি মনে করি।

শেয়ারবাজার কার্যক্রম পরিচালনা করা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর পারফরম্যান্সসহ সার্বিক তদারকি করছে বিএসইসি। প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিবিধান প্রণয়নের দায়িত্বও এ নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপর।

দীর্ঘমেয়াদে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর পারফরম্যান্সের বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শাসসুদ্দিন আহমেদ গণসাধ্যমকে বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ব্রোকারেজ হাউজগুলো ব্যবসায়িকভাবে ভালো করার বেশকিছু কারণ রয়েছে।

এর মধ্যে গ্রাহকের সঙ্গে সম্পর্ক, গ্রাহক আনুগত্য ও আস্থা এবং ভালো দিকনির্দেশনা দিতে পারার মতো বিষয় রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, ঝুঁকি বহনের সক্ষমতা, দক্ষ জনবলের কারণেও এ প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে রয়েছে। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ কিংবা স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এমন অভিযোগ নেই।

সামনের দিনগুলোতে এসব সক্ষমতার পাশাপাশি আরো বেশকিছু বিষয় যেমন ডিজিটাইজেশন, নিজস্ব অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস), ব্যাক এন্ডের সফটওয়্যার যাতে সঠিকভাবে কাজ করে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।