রাজশাহীতে আইসিইউর জন্য হাহাকার

ক্রমাগত করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। বাড়ছে আক্রান্ত রোগী দের বেচে থাকার লড়াই। আইসিইউর জন্য চারদিকে হাহাকার বাড়ছে। এ যেমন গত ৮ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে আসেন নাটোরের বড়াইগ্রামের ব্যবসায়ী সুবোধ কুমার সরকার (৪৫)। ভর্তি করা হয় ২৫নং করোনা ওয়ার্ডে। পরদিন তার করোনা শনাক্ত হয়। শনিবার বিকাল থেকে তার শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে।

তার ভাগ্নে অপূর্ব কুমার মামাকে বাঁচাতে একটি আইসিইউর জন্য হাসপাতালে ছোটাছুটি শুরু করেন। তিনি ব্যর্থ হন। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে রোববার ভোর পৌনে ৪টার দিকে সুবোধের মৃত্যু হয়। পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুবোধের শেষক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। অপূর্বর আক্ষেপ, আইসিইউ পেলে হয়তো মামাকে বাঁচানো যেত। আইসিইউ ইনচার্জ তাকে বলেছেন, তোমার মামার ভার ইশ্বরের ওপর ছেড়ে দাও। আমাদের কিছু করার নেই। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, আইসিইউ সংকট তীব্র। কিছু করার নেই।

জানা গেছে, কিছু দিন ধরে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় দৈনিক গড়ে দুই থেকে আড়াইশ করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। এদের অধিকাংশই প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসার বাইরে আছেন। গুরুতর রোগীরাও হাসপাতালে এসেও আইসিইউ সুবিধা না পেয়ে অনেকেই মারা যাচ্ছেন। গুরুতর রোগীর স্বজনরা বলছেন, রাজশাহীতে আইসিইউর তীব্র সংকটের কারণে আক্রান্ত অনেককে বাঁচানো যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য দপ্তর বলছে, রাজশাহী বিভাগে তিনটি হাসপাতালে ৫১টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বেড রয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছে ২০টি। এর মধ্যে ১০টি সংরক্ষিত আছে ভিআইপি ও অন্যান্য রোগীর জন্য। বাকি ১০টি চালু আছে করোনা রোগীদের জন্য। ভুক্তভোগীরা বলছেন, সবসময় দু/একটি খালি থাকলেও প্রভাবশালী কারও সুপারিশ ছাড়া রাজশাহী মেডিকেলে আইসিইউ পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

আরও পড়ুন- অতিরিক্ত মদপানে রাজশাহীতে ৩ যুবকের মৃত্যু