মূলধন বাড়াতে ‘৬৪ কোম্পানীকে চিঠি’ দিয়েছে বিএসইসি

শরীয়াহ কাউন্সিল

পুঁজিবাজারের মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ৩০ কোটি টাকার নিচে মূলধন থাকা এমন ৬৪টি কোম্পানিতে চিঠি ইস্যু করেছে বিএসইসি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, গত ৯ ডিসেম্বর বিএসইসির সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ মিনহাজ বিন সেলিম সই করা চিঠিটি সকল কোম্পানিতে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পারিচালক, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পারিচালক এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অফ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পারিচালকে অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিস্টিং রেগুলেশন ২০১৫ এর  ৯ ধারার আই উপধারা অনুযায়ী মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার নিচে থাকতে পারবে না। সেই অনুযায়ী আপনার কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার উপরে করতে হবে।

তবে এই ক্ষেত্রে বিএসইসি দুইটি ক্যাটাগরি করেছে। এর মধ্যে ২০ কোটি টাকা উপরে থাকা কোম্পানিগুলোকে ৬ মাস ও ২০ কোটি টাকার নিচে মূলধনী কোম্পানিগুলোকে ১ বছর সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সকল কোম্পানিকে এই নির্দেশনা পরিপালন করতে বলা হয়েছে। এই আইন পরিপালন করার জন্য কোম্পানির ব্যবসা অনুযায়ী নতুন মূলধন যুক্ত করে বা বোনাস শেয়ার ইস্যু করে বা রাইট শেয়ার ইস্যু করে বা রিপিট আইপিও’র মাধ্যমে করা যাবে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজউল করিম বলেন, পুঁজিবাজারের স্টেইকহোল্ডারদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ স্বল্প মূলধনী কোম্পানি নিয়ে কিছু বিনিয়োগকারী কারসাজি করে। এতে করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অভিযোগটি কমিশনের নজরে আসার পর সার্ভিল্যান্স বিভাগ কমিশনে একটি প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে। এর পর কমিশন একটি কমিটি করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, কমিটির সুপারিশের আলোকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ও পাবলিক ইস্যু আইন পরিপালন করার জন্য কোম্পানিগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে।

অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, যেই কোম্পানির ব্যবসা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেই কোম্পানির জন্য এটি ভালো উদ্যোগ। তবে যাদের ব্যবসা খারাপ তারা মূলধন বাড়িয়ে কী করবে। এতে করে কোম্পানির আয় আরও কমে যাবে। ফলে বিনিয়োগকারীরা আরও ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

২০ কোটি টাকার উপরে মূলধনী কোম্পানি:

সিনো বাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ ২০ কোটি টাকা, রহিমা ফুডস কর্পোরেশন ২০ কোটি টাকা, সিভিও পেট্টোক্যামিকেল রিফাইনারি ২৫.২ কোটি টাকা, এইচআর টেক্সটাইল ২৫.৩ কোটি টাকা, সোনার গাঁও টেক্সটাইল ২৬.৫ কোটি টাকা, মেঘনা সিমেন্ট মিলস ২৭.৩ কোটি টাকা।

২০ কোটি টাকা নিচে মূলধনী কোম্পানি:

আজিজ পাইপ ৫.৩ কোটি টাকা, বাংলাদেশ ল্যাম্প ৯.৪ কোটি টাকা, মুন্নু এগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মিশেনারিজ ২.৭ কোটি টাকা,বাংলাদেশ অটোকার্স ৪.৩ কোটি টাকা, রেনওইক জগেশ্বর ২ কোটি টাকা, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ১৫.২ কোটি টাকা,কে অ্যান্ড কিউ ৪.৯ কোটি টাকা, রংপুর ফাউন্ডেরি ১০ কোটি টাকা, অ্যাপেক্স ফুডস ৫.৭ কোটি টাকা, বঙ্গজ ৭.৬ কোটি টাকা, জেমেনি সি ফুডস ৪.৭ কোটি টাকা ন্যাশনাল টি কোম্পানি ৬.৬ কোটি টাকা, জিলবাংলা সুগার মিলস ৬ কোটি টাকা, এগ্রিকালচার মার্কেটিং (প্রাণ) ৮ কোটি টাকা টাকা, শ্যামপুর সুগার মিলস ৫ কোটি টাকা,  মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ ১২ কোটি টাকা, মেঘনা কনডেস্ক মিল্ক ১৬ কোটি টাকা, ফাইন ফুডস ১৪ কোটি টাকা, ইউনিলিভার কনজুমার ১২ কোটি টাকা।

লিন্ডে বাংলাদেশ ১৫.২ কোটি টাকা, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ১ কোটি টাকা, জুট স্পিনার্স ১.৭ কোটি টাকা, নর্দান জুট ম্যানুফেকচারিং কোম্পানি ২.১ কোটি টাকা, সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ ২.৭১ কোটি টাকা,আলহাজ টেক্সটাইল মিলস ২২.৩ কোটি টাকা, স্ট্যাইল ক্রাফ্ট ১৩.৯ কোটি টাকা,রহিম টেক্সটাইল মিলস ৯.৫ কোটি টাকা, দোলামিয়া কটন স্পিনিং মিলস ৭.৬ কোটি টাকা,অ্যাপেক্স স্পিনিং অ্যান্ড নিটিং মিলস ৮.৪ কোটি টাকা,  আনলিমা ইয়ার্ন ডায়িং ১৭.৯ কোটি টাকা।

এম্বি ফার্মাসিটিউক্যালস ২.৪ কোটি টাকা, রেকিট বেনকিজার ৪.৭ কোটি টাকা,ফার্মা এইডস ৩.১ কোটি টাকা, কহিনুর ক্যামিকেলস ২২.২ কোটি টাকা, ওয়াতা ক্যামিকেলস ১৪.৮ কোটি টাকা,লিব্রা ইনফিউশন ১.৫ কোটি টাকা, অরিয়ন ইন্ডাস্ট্রিজ ২০.৪ কোটি টাকা, ইমাম বাটন ইন্ডাস্ট্রিজ ৭.৭ কোটি টাকা, জিএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিক্যালস ডিভাইস ২২.১ কোটি টাকা, হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপারস মিলস ১৯ কোটি টাকা, সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস ১৮.৩ কোটি টাকা, বাংলাদেশ মনুসপুল পেপার ৯.৪ কোটি টাকা,  পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ১০.৫ কোটি টাকা, শমরিতা হাসপাতাল ১৮.৯ কোটি টাকা।

ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক ১০.৯ কোটি টাকা, অ্যাপেক্স ট্যানারি ১৫.২ কোটি টাকা, বাটা সু ১৩.৭ কোটি টাকা, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ১১.৩ কোটি টাকা, শমতা লেদার কমপ্লেক্স ১০.৩ কোটি টাকা, লিগেসি ফুটওয়্যার ১৩.১ কোটি টাকা, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ ৬.৫ কোটি টাকা, অ্যারামিট ৬ কোটি টাকা, জিকিউ বল পেন ইন্ডাস্ট্রিজ ৮.৯ কোটি টাকা, উসমানিয়া গ্লাস সিট ফ্যাক্টরি ১৭.৪ কোটি টাকা, সাভার রিফেক্টরিজ ১.৪ কোটি টাকা, দেশ গার্মেন্টস ৭.৫৩ কোটি টাকা, এবং প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ১৬.৬ কোটি টাকা।