বিশ্বকাপ নিয়ে সাবেক অধিনায়ক আশরাফুলের পর্যবেক্ষণ

আশরাফুল

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যা খেলল বাংলাদেশ, তা নিয়ে আসলে কিছুই বলার নেই। টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়াটা বোধ হয় ঠিক হয়নি, এটা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমি মনে করি, ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের দলকে টস জিতলে আগে ব্যাটিংয়েই পাঠানো উচিত।

কারণ, আমরা আগে ব্যাটিং করে যদি স্কোরবোর্ডে বড় একটা সংগ্রহও তুলতাম, জেসন রয়, জস বাটলারদের ইংল্যান্ড সেটি খুব সহজেই পেরিয়ে যেত। আগে বোলিং করার ভাবনার মূল হচ্ছে, এ ধরনের দলকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে যদি ওদের খারাপ খেলানো যায়, বাজে দিন আনা যায়। আমি অধিনায়ক হলে সেটিই করতাম।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে পরিকল্পনার ছিটেফোঁটাও দেখলাম না। লিটন শুরুটা সুন্দর করল, কিন্তু যে আউট হলো, সেটি দৃষ্টিকটু। সাকিব আল হাসান দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফিরল, এটাই আমাদের ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে। মুশফিকুর রহিম সেট হয়েও রিভার্স সুইপ কেন খেলতে গেল, সেটা বুঝতে পারলাম না। আফিফ হোসেন নিজেকে প্রমাণের আরও একটা সুযোগ হারাল। উইকেট যে ব্যাটিং উপযোগী ছিল, সেটা বোঝাই গেছে।

আমাদের ব্যাটসম্যানরাই পারেনি। ইংলিশ বোলিং যে খুব আহামরি ছিল বলব না, জায়গামতো বোলিং করেছে। এমনিতেই বড় দলগুলোর হোমওয়ার্ক খুব ভালো, বাংলাদেশের মতো দলকে তো আরও দ্রুত পড়ে ফেলতে পারে ওরা। লিটনের আউটটাই দেখুন। ওরা জানত, সুযোগ পেলেই সে মারবে ওখানে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আর একটি ম্যাচও আমরা জিতব না, দলের অবস্থা ভালো না। মানসিকভাবে ভয়ংকর অবস্থায় আছে। প্রথম দিন থেকেই দলের মোরাল খুব নিচে। আমি তো মনে করি, নামিবিয়া, স্কটল্যান্ডের মতো দলগুলোও বাংলাদেশের চেয়ে অনেক ভালো প্রস্তুতি নিয়ে খেলতে এসেছে।

আমরা মিরপুরের মরা উইকেটে অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলে সিরিজ জিতেই খুব উল্লসিত হয়ে পড়েছিলাম। অলক্ষ্যে যে বিপদ অপেক্ষা করছিল, সেটি বুঝিনি। লো স্কোরিং ম্যাচে কোনোমতে জিতেছি; ব্যাটসম্যানরা যে কেউই রানে নেই, সেটি চোখ এড়িয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, আমি গত পরশুদিনের পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের কথা বলব। দেখুন, কী কঠিন পরিস্থিতি থেকে পাকিস্তানের জন্য শোয়েব মালিক ম্যাচটা বের করে নিল। সে তার অভিজ্ঞতার পুরোটা ব্যবহার করেছে। টি-টোয়েন্টি খেলতে খেলতে সে ঋদ্ধ।

কোন পরিস্থিতিতে কেমন খেলতে হবে, কোন শট খেলতে হবে, এমনকি কোন দিকে খেলতে হবে, সবই ওর মাথার মধ্যে প্রোগ্রামিং করা। আমাদের অভিজ্ঞরা কিন্তু সেটি পারে না। কারণ, তাদের টি-টোয়েন্টি খেলার অভ্যাস নেই।

আরো পড়ুন : ‘পৃথিবীর কোনো ব্যাটার লিটনের মতো সুযোগ পায় কিনা, জানি না’