থার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে ডিএমপির নিষেধাজ্ঞা, বিশেষ নির্দেশনা

থার্টি ফার্স্ট নাইট

ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর রাতে থার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠানগুলো পালিত হবে। করোনা মহামারীর কারণে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশনা, নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে অনুষ্ঠান করতে হবে। এ ছাড়া পটকাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি, মোটরসাইকেল চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়।

তবে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। উৎসব উদযাপনের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ঐতিহ্য বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে থাকে। কতিপয় ব্যক্তি আনন্দের আতিশয্যে পটকাবাজি, আতশবাজি, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানোর মাধ্যমে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা/দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়। ক্ষেত্র বিশেষে প্রকাশ্যে অভদ্রজনোচিত আপত্তিকর আচরণ করে থাকে। এসবের কারনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা সৃষ্টি করে।

ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনকালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির যে কোনো ধরনের আশঙ্কা রোধকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বদ্ধপরিকর। এছাড়াও ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে নিন্মোক্ত নির্দেশনাগুলো মেনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হল।

নির্দেশনায় বলা রয়েছে-

১. উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান করা বা সমবেত হওয়া যাবে না বা নাচ, গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।

২. ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায়, ভবনের ছাদে এবং প্রকাশ্যে স্থানে কোনো ধরনের জমায়েত/সমাবেশ/উৎসব করা যাবে না।

৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে পায়ে হেঁটে প্রবেশ করতে পারবে।

৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না।

৫. কোথাও কোনো ধরনের আতশবাজি/পটকা ফোটানো যাবে না।

৬. গুলশান ও বনানী এলাকায় রাত ৮টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে ওই এলাকায় বসবাসরত নাগরিকরা নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে।

৭. একইভাবে উল্লেখিত সময়ের পর সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যেসব নাগরিক বসবাস করেন না তাদের বর্ণিত এলাকায় আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

৮. রাত ৮টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে অবস্থান করতে দেয়া হবে না।

৯. সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে আবাসিক হোটেলগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে। তবে কোনোভাবেই ডিজে পার্টি করতে দেয়া যাবে না।

১০. ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার পর ঢাকা মহানগরীর কোনো বার খোলা রাখা যাবে না।

১১. রাত ১০টার পর সব ফাস্টফুড দোকান বন্ধ থাকবে।

১২. গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

১৩. ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখ ভোর ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সব ধরনের লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট নগরবাসীকে অনুরোধ করা হয়েছে।

নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে ডিএমপি।

৭. সড়ক ব্যবহার সংক্রান্তে যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে ফোন করতে বলা হয়েছে- ডিসি ট্রাফিক (রমনা)-০১৩২০-০৪২২৬০, এডিসি ট্রাফিক (রমনা)-০১৩২০-০৪২২৬১, এডিসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৩২০-০৪৪৩৬১, এসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৩২০-০৪৪৩৭২, ডিসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৩২০-০৪৪৩৬০, এসি ট্রাফিক (মহাখালী)-০১৩২০-০৪৪৩৭৫, ডিসি (গুলশান)-০১৩২০-০৪১৪২০ ও ডিসি (রমনা)-০১৩২০-০৩৯৪৪০।

যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট নাগরিকদেরকে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সাহায্য গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে। একইসঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সহায়তা করার জন্য নাগরিকদের অনুরোধ করেছে ডিএমপি।

আরও পড়ুন- সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে যৌথ অভিযানে রাজি বিজিবি-বিএসএফ