খুলনায় প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ত্বীন চাষ

খুলনায় বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবারের মতো হচ্ছে ত্বীন চাষ। জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষক অনুপম মণ্ডল তার বাড়ির ছাদে ড্রাম পদ্ধতিতে একশ গাছ এবং মাঠেও লাগিয়েছেন এই ফলের গাছ।
শখের বসে একটি গাছ কিনে আজ তার ২০০টির মতো গাছ রয়েছে। যার প্রত্যেকটিতে ফল ধরেছে।

আঁটি ও বিচিহীন বিচিত্র কালারের দৃষ্টিনন্দন এ ফল। দেখতে আকর্ষণীয় ও সুমিষ্ট রসালো স্বাদযুক্ত। ফলটি আবরণ সহকারেই খাওয়া যায়। পুষ্টিগুণে সৃমদ্ধ এই ফলটি হচ্ছে ত্বীন। পবিত্র কোরআনের ত্বীন সুরায় বর্ণিত মিষ্টি ও সুস্বাদু এই ফল বাংলাদেশের মাটি-আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে।

কৃষি বিভাগ সূত্র ফলটির ব্যাপারে জানায়, ৬ মাসের ত্বীন চারা লাগানোর ২-৩ মাসের মধ্যেই ফল দেওয়া শুরু করে। বছরের ৩৬৫ দিনই উচ্চ ফলন দিয়ে থাকে। রোগবালাই নেই বললেই চলে। একটি ত্বীনগাছ গুণগত ফল দিয়ে থাকে অন্তত ২৫ বছর পর্যন্ত।

মিশরীয় জাতের এই ফলটির গাছ থেকে কলম করে চারা তৈরি করছে এই অনুপম মণ্ডল। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই ফলটি ভোজনরসিক মানুষের জন্য জনপ্রিয়। এই ফলচাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। একইসঙ্গে এর চারা দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিতে চান তিনি। সে জন্য গাছ কাটিং করে প্রস্তুত করছেন কলমের চারা।

সেই চারা চাষিদের মধ্যে বিক্রি করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সহজেই চাষযোগ্য এই গাছের সুস্বাদু ফলের দামও ভালো। তাই তো শুধু অনুপম মণ্ডলই নয়, কৃষক নবদ্বীপসহ খুলনার বিভিন্ন স্থানে ত্বীন ফল চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

আরো পড়ুন- পাটবীজ উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীল ৫ বছরে বাংলাদেশ

কৃষক অনুপম মণ্ডল বলেন, শখের বসে গত বছর একটি ত্বীনগাছ কিনে সেই গাছ থেকে ৫ কেজির মতো ফল পেয়েছি। ফলটি আমি খেয়েছি। খুব মিষ্টি। এক কেজি ১ হাজার টাকায় বিক্রিও করেছি।

তিনি আরও বলেন, কোরআনে বর্ণিত ফলটিতে শুনেছি ৭০ প্রকার ঔষধি গুণ রয়েছে। তার পর চিন্তা করলাম চাষ করে দেখি। এরপর ভারতের কেরালা থেকে আরও ২০০টি গাছ এনেছি। ছাদে প্রতি ড্রামে একটি গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করে ব্যয় পড়েছে ১ হাজার ৬০০ টাকা।

কৃষি ক্ষেত্রে অবদান রাখা এই কৃষক বলেন, আমার দেখাদেখি অনেকেই ত্বীন চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এখানকার নবদ্বীপসহ অনেকেই ত্বীন চাষে ঝুঁকছেন। ছাদে ত্বীন চাষে সফল হওয়া সম্ভব। যাদের ছাদ রয়েছে তারা ফেলে না রেখে ড্রাম পদ্ধতিতে ত্বীন, আপেল, রামভূটান, জয়তুন গাছ লাগালে খুবই লাভবান হবে।

খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপপরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, প্রথমে বটিয়াঘাটার মাদ্রাসায় ত্বীনের চারা লাগানো হয়। সেখানে ভালো ফলন পাওয়াতে খুলনার বিভিন্ন উপজেলায় এটার বিস্তার শুরু হয়।