ওয়ান ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে অপসারণ

ঋণ খেলাপি হওয়ায় এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরীকে ওয়ান ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন,  ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে “ একই সঙ্গে তিনি আগামী তিন বছর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বসতে পারবেন না।”

গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে ব্যাংকটিকে চিঠি দেয়।  সেখানে বলা হয়েছে, সাঈদ হোসেন চৌধুরীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে খেলাপি ঋণ থাকায় ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী তার ওয়ান ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান থাকার কোনো সুযোগ নেই।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, “সাঈদ হোসেন চৌধুরী তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়েছিলেন। নিয়মিত পরিশোধ না করায় পরে তা খেলাপি হয়ে যায়। এখন ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী একজন খেলাপি কোনো ব্যাংকের পরিচালক থাকতে পারেন না। আর পরিচালক না হলে চেয়ারম্যান হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।” এ নিয়ে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অভিযোগ করে। এরপরও তিনি ঋণ শোধ করেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে অপসারণ করা হয়।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর ভাই সাঈদ হোসেন চৌধুরী এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তাদের বাবা হেদায়েত হোসেন চৌধুরী ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা।

এইচআরসি গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এইচআরসি শিপিং লাইনসের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন সাঈদ হোসেন । গত বছরের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এইচআরসি শিপিং লাইনসের কাছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সুদসহ মোট পাওনা দাঁড়ায় ১২১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

সেই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের খেলাপির তালিকায় তার নাম আসে। পাওনা আদায়ে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ৩১ দশমিক ৮০ ডেসিমেল জমির ওপর সাঈদ হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন আরেক প্রতিষ্ঠান আরাকান এক্সপ্রেস লিমিটেডের বাণিজ্যিক শেড ও স্থাপনা নিলামে বিক্রির প্রস্তুতি নেয় স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা। ঋণ নেওয়ার সময় ওই সম্পত্তি বিন্ধক রেখেছিল এইচআরসি গ্রুপ।

পারিবারিকভাবেই শিপিং লাইনস হানজিন ও পিআইএলসহ বেশ কয়েকটি শিপিং লাইনসের ব্যবসা ছিল সাঈদ হোসেন চৌধুরীর। সে সুবাদে নিজেও এইচআরসি শিপিং লাইনস নামে ওই কোম্পানি গড়ে তোলেন তিনি। এক সময় পণ্য আনা-নেওয়ায় আটটি জাহাজ ছিল এ কোম্পানির বহরে।

তবে বর্তমানে ওই কোম্পানির বাণিজ্যিক কার্যক্রম নেই। বারিধি শিপিং লাইনস লিমিটেড, এভারগ্রিন, বাংলাদেশ ল্যান্ড লিমিটেড, এইচআরসি সিন্ডিকেট, এইচআরসি ট্র্যাভেলস, এইচআরসি লাইটিং, এইচআরসি প্রপার্টিজ, এইচআরসি মিডিয়া, আরাকান এক্সপ্রেস লিমিটেডসহ মোট ২০টি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় আছেন সাঈদ হোসেন চৌধুরী।

আরো পড়ুন- পাঁচ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ ঘোষণা করলো এবি ব্যাংক