অভিজিৎ হত্যা : ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন

মৃত্যুদণ্ড

ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

আজ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১২ টায় ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

এ রায় নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের গোলাম সারোয়ার জাকির জানান, ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ সক্ষম হয়েছে। রায় ঘোষণার আগে মঙ্গলবার সকালে কাশিমপুর কারাগারে থাকা চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ মামলার দুই আসামি এখনো পলাতক রয়েছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (সাংগঠনিক নাম শাহরিয়ার), আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আকরাম হোসেন ওরফে আবির ও মো. আরাফাত রহমান। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি হলেন শফিউর রহমান ফারাবি।

তাদের মধ্যে মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া ও আকরাম হোসেন ওরফে আবির শুরু থেকেই পলাতক। বাকি চারজন কারাগারে রয়েছেন।

এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার অভিযোগ প্রমাণের জন্য চার্জশিটের ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে অভিজিতের বাবা অধ্যাপক ড. অজয় রায়সহ ২৮ জনের সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন।

মামলায় ২০১৯ সালের ১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে ট্রাইব্যুনাল। ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পুলিশ ইন্সপেক্টর মুহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের বিভিন্ন ধারায় এ চার্জশিট দাখিল করা হয়, যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

চার্জশিটে বলা হয়, ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করে অপপ্রচার ও মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করায় জঙ্গি গ্রুপ আনসার আল ইসলামের নেতা মেজর জিয়ার নির্দেশ ও পরিকল্পনা এবং শারীরিক প্রশিক্ষক সেলিমের উপস্থিতিতে সংগঠনটির সদস্যরা অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার দুদিন আগে থেকে জঙ্গি সায়মন, সোহেল, আকরাম ও হাসান অভিজিৎ রায়ের গতিবিধি অনুসরণ করে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে আরাফাত, খলিল ওরফে আলী, অন্তু ও অনিক হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। হত্যাকাণ্ডের সময় মেজর জিয়া, শরীরচর্চা প্রশিক্ষক সেলিম ঘটনাস্থল ঘিরে রাখেন যাতে তাদের সহযোগীদের কেউ আটক করতে না পারে। হত্যাকাণ্ডের পর তারা ঘটনাস্থলে ব্যবহৃত চাপাতি ফেলে পালিয়ে যান।

আরও পড়ুন- প্রকাশক দীপন হত্যায় ৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশে বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা এবং তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ ওরফে বন্যাকে গুরুতর আহত করা হয়। তারা উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। অভিজিৎ যুক্তরাষ্ট্রে সফটওয়্যার প্রকৌশলী ছিলেন এবং বন্যা চিকিৎসক। ঘটনার পরদিন অভিজিতের বাবা অজয় রায় শাহবাগ থানায় এ হত্যা মামলা করেন।