ধানে পোকা, দুশ্চিন্তায় কৃষক

ধানে

হিলিতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কাটারি ধানের আবাদ। তবে এবার ধানে পোকার আক্রমণে খরচ ওঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।

হিলির ছাতনি গ্রামের কৃষক সিদ্দিক হোসেন বলেন, গতবছর দুই বিঘা জমিতে কাটারি জাতের ধান লাগিয়েছিলাম। ফলনও বেশ ভালো হয়েছিল এবং দামও বেশ ভালো পেয়েছি। চাহিদাও বেশ ছিল এমনকি বাড়ি থেকেই পার্টিরা ধান কিনে নিয়ে যায়। এবারেও ভালো দাম পাওয়ার আশায় এনজিও থেকে লোন নিয়ে আবাদ বাড়িয়ে ৩ বিঘা জমিতে কাটারি ধান লাগিয়েছি। প্রথম থেকে বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু ঠিক যেসময় ধান বের হবে সেই সময় ধানে ফটকা পোকা ধরেছে। এতে করে খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। লোকসান গুনতে হবে বলে মনে হচ্ছে।

এদিকে জালালপুর গ্রামের সুজন জানান, অন্যান্য ধানের তুলনায় চিকন ধানের ভালো দাম পাওয়ার কারণে লাভজনক হওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কাটারি ধানের আবাদ। মাঠের পর মাঠ এই চিকন ধানের আবাদ করছেন কৃষকরা। এবারও সেই আশায় কাটারি ধান লাগিয়েছি। গাছের অবস্থাও বেশ ভালো ছিল। কিন্তু এখন এসে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে পচারির মতো একধরনের রোগ ধরে পুড়ে যাওয়ার অবস্থা। এটা মাজরা না কারেন্ট পোকা তাও বোঝা যাচ্ছে না। তিন থেকে চার বার ওষুধ ছিটিয়েছি তারপরেও ধান ভালো করতে পারছি না। এমনভাবে পুড়ে গেছে, জমির জায়গায় জায়গায় ভালো আবার জায়গায় জায়গায় সাদা হয়ে গিয়েছে। প্রতিবছর বিঘা প্রতি ১২ মণ করে ধান পেলেও এবারে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাতে করে ৬ মণ ধান পাবো কিনা সন্দেহ। এতে ধান আবাদ করতে যে আমাদের খরচ হয়েছে তাতে লোকসান হবে।

আরো পড়ুন- শিম চাষে বদলে যাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আরজেনা বেগম বলেন, হাকিমপুর উপজেলায় দিন দিন চিকন ধানের আবাদ বাড়ছে। গতবছর এই উপজেলায় ১ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে চিকন ধানের আবাদ হলেও এবারে তা বেড়ে ৩ হাজার ৭২৯ হেক্টর জমিতে চিকন ধানের আবাদ হয়েছে। এই চালের চাহিদা থাকায় ও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে এই ধান আবাদ করছে। আমরা নিয়মিত গ্রুপ মিটিংসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। হাকিমপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে পোকা মাকড়ের আক্রমণ তেমন একটা নেই। কিছু বিচ্ছিন্ন সমস্যা রয়েছে। তাতে বড় কোনও সমস্যা হবে না আশা করি। মাঠ কর্মীরা নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করছেন এবং আমরাও তাদেরকে নিয়মিত মনিটরিং করছি।