অভিনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা দিলুর জীবনাবসান

মঞ্চ ও টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ বিশিষ্ট অভিনেতা, নাট্য পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান দিলু মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ফেইসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে দিলুর বড় ভাই নাট্যকার আতাউর রহমান বিষয়টি জানান।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

তিনি লিখেন, ‘আমার ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা, কীর্তিমান মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেতা মজিবুর রহমান দিলু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আজ সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে অসীমের যাত্রী হয়েছেন।

‘সে জীবনযুদ্ধে যেমন ছিল এক পরাক্রান্ত সৈনিক, তেমনি ছিল এক বর্ণিল জীবনের অধিকারী। তার আত্মার চির শান্তি কামনাই দেশবাসীদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা’ যোগ করেন আতাউর রহমান।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে উত্তরার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন ৬৯ বছর বয়সী মুজিবুর রহমান দিলু। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলেও দিলুর ফুসফুসে সংক্রমণ ৭০ ভাগ ছাড়িয়ে যায়। একই সঙ্গে হার্টবিট কমে যায়। তাকে রাখায় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলেও করোনা আক্রান্তের উপসর্গ এবং সাইটোকাইন স্ট্রোম বয়ে যায় দিলুর শরীরে।

বিটিভিতে প্রচারিত হুমায়ূন আহমেদের ‘সংশপ্তক’ নাটকে বড় মালু চরিত্রে অভিনয় করে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পেয়েছিলেন মজিবুর রহমান দিলু। অনেকে তাকে বড় মালু নামেই চেনেন।

খ্যাতিমান এই অভিনেতার উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক হচ্ছে- ‘আমি গাধা বলছি’, ‘জনতার রঙ্গশালা’, ‘নীল পানিয়া’, ‘নানা রঙ্গের দিনগুলি’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘ওমা কী তামাশা’ প্রভৃতি।

মুক্তিযোদ্ধা এই অভিনেতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘ঢাকার ড্রামা’ নামে একটি নাট্যগোষ্ঠী।

স্কুলে পড়ার সময়ই স্বাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন দিলু। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে যে মিছিলে গুলিতে আসাদ শহীদ হয়েছিলেন সেই মিছিলে ছিলেন তিনিও।

১৯৫২ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন দিলু। পেশাগত জীবনে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন তিনি।

আরো পড়ুন- অভিনেতা আবদুল কাদেরের মৃত্যু